আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০৯:৩০

ছয় দশক ধরে পৌনে তিন'শ কোটি টাকার মালিকদের খোঁজ নেই

৬০ বছরের বেশি সময় ধরে নিজের পৌনে তিন শ কোটি টাকা মূল্যের ধনদৌলতের খোঁজ রাখছেন না তাঁরা। পঞ্চাশের দশক কিংবা এর আগে তাঁরা সুইস ব্যাংকে একটি হিসাব খুলেছিলেন কিংবা একটি নিরাপত্তা লকার কিনেছিলেন। সেখানে নিজেদের অর্থ-কড়ি, ধনদৌলত রেখেছেন। কিন্তু সেই ১৯৫৫ সালের পর সুইস ব্যাংকের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখেননি, খোঁজ নেননি তাঁদের সম্পদের।

সম্প্রতি সুইস ব্যাংক এসব নিষ্ক্রিয় হিসাবধারীর নাম, ঠিকানা, দেশসহ যাবতীয় পরিচয় প্রকাশ করেছে। ৬০ বছর কিংবা এর বেশি সময় ধরে খোঁজ নেন না এমন প্রায় ২ হাজার ৬০০ নিষ্ক্রিয় হিসাবধারী রয়েছেন। এর মধ্যে ৮০ জন নিরাপত্তা লকারধারী রয়েছেন।তবে এসব লকারে ঠিক কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তা জানে না সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, সব মিলিয়ে তাঁদের সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক সাড়ে চার কোটি ডলার, বাংলাদেশের মুদ্রায় যা প্রায় পৌনে তিন শ কোটি টাকা। এ তালিকায় চারজন ভারতীয় রয়েছেন। এ তালিকায় সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকই বেশি।

সুইস ব্যাংক এমন ‘ভুতুড়ে’ গ্রাহকদের নিয়ে বিপদেই ছিল। গত ১ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ড সরকার নতুন আইন প্রণয়ন করে। সেখানে বলা হয়, ৬০ বছর কিংবা এর বেশি সময় ধরে সুইস ব্যাংকের যেসব গ্রাহক তাঁদের আমানতের খোঁজ নেন না, তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা যাবে। উল্লেখ্য, সুইস ব্যাংকের গ্রাহকদের নাম-পরিচয় গোপন রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে এখন থেকে প্রতিবছর এমন হিসাবধারীদের তালিকা প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছে সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

হেইগ আজনাভোরিয়ান যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক। তিনি ছয় দশকের বেশি সময় ধরে তাঁর অর্থের খোঁজ রাখেন না। যদি তিনি বেঁচে থাকেন, তবে তাঁর বয়স এখন ১১২ বছর।

অন্যদিকে ১৮৮১ সালে জন্ম নেওয়া জার্মান নাগরিক আগস্ট আব্রাহামও সুইস ব্যাংকে টাকা রেখেছিলেন। তবে ব্যাংক হিসাবে তাঁর ঠিকানা দেওয়া আছে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ।

সুইস ব্যাংকের প্রকাশ করা এ তালিকায় এশিয়ার মধ্যে ইরানের নাগরিকই বেশি। আবার আফ্রিকার লাইবেরিয়ার মতো দরিদ্র দেশে বসবাসকারীও রয়েছেন। মূলত উপনিবেশবাদের কারণে অনেক ইউরোপীয় আফ্রিকায় গিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছিলেন। সেই ধনীদের অনেকেই সুইস ব্যাংকে অর্থ-কড়ি রেখেছেন।

সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, মূলত তিনটি কারণে এসব হিসাব বা নিরাপত্তা লকারের মালিকের খোঁজ নেই। হয়তো হিসাবধারীরা মারা গেছেন বা অন্য দেশে চলে গেছেন কিংবা ব্যবসায় লোকসান হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত