সিলেটটুডে ডেস্ক

২০ জানুয়ারি, ২০১৬ ০১:২৬

ইরান পরিস্থিতিতে শঙ্কায় সৌদি আরব!

ইরানের উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর সৌদি আরব সরকারিভাবে তেমন প্রতিক্রিয়া না দেখালেও মধ্যপ্রাচ্যে নিষেধাজ্ঞা মুক্ত তেহরানের বিপ্লবী কর্মকাণ্ড বেড়ে যেতে পারে বলেই শঙ্কায় আছে সৌদিরা।

মধ্যপ্রাচ্য-জুড়ে বছরের পর বছর ধরেই চলে আসছে সৌদি-ইরান তীব্র রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে ইরানকে প্রধান প্রতিযোগী হিসাবেই দেখে সৌদি আরব। রিয়াদের নতুন শাসকরা কট্টরপন্থা অবলম্বন করায় এবং পরমাণু চুক্তিতে তেহরানের চাপ কমায় সম্প্রতি কয়েকমাসে দুই দেশের সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও বেড়েছে।

ইরানের উপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা  উঠে যাওয়ায় তেল রপ্তানিকারক দুই দেশের অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা বাড়ারও পট প্রস্তুত হয়েছে। কারণ প্রায় একযুগ ধরে সৌদি আরবের নিয়ন্ত্রণে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের তেল বাণিজ্য এখন আরও প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে।

রিয়াদ ইরানের নিষেধাজ্ঞা মুক্তিতে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও দেশটির আংশিক-সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত কার্টুন এবং প্রভাবশালী ধর্মী নেতাদের মন্তব্যে সৌদি আরবের আতঙ্ক ধরা পড়েছে।

দৈনিক আল-ওয়াতানে একটি কার্টুন ছাপা হয়েছে। যেখানে দেখানো হয়েছে ‘শান্তি’ শব্দ লেখার সময় একটি পেন্সিল মাঝপথে ভেঙে গেছে।

নিচে লেখা: “পরমাণু চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর কি ইরান পাল্টাবে?” উত্তরে লেখা: “সম্ভবত না।”

সৌদি আরবের রক্ষণশীল সুন্নি সরকার মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা স্থাপনের পথে ইরানকে বাধা মনে করে। তাদের দাবি, ইরান শিয়া জঙ্গিদের মদদ দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে জাতিগত দাঙ্গার উসকানি দেয় এবং আরব সরকারকে অবজ্ঞা করে।

সৌদি রাজবংশ মনে করে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলে তা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের উস্কানিমূলক আচরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হত। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা মুক্তিতে সে সম্ভাবনা যেমন স্তিমিত হয়ে পড়ল তেমনি সৌদি আরবের শক্তিশালী মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সখ্যতার পটও এর মধ্য দিয়ে প্রস্তুত হল।

বাদশাহ সালমানের সময় সৌদি আরব তেহরানকে আঞ্চলিক প্রভাব খাটানো থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে ইয়েমেনে যুদ্ধ শুরু করে এবং সিরিয়ায় ইরানি মিত্রদের সঙ্গে লড়াইরত বিদ্রোহীদেরকে সহায়তা করতে শুরু করে।

ওদিকে, ২০১৩ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ধারাবাহিকভাবে সরাসরি রিয়াদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে আসলেও সম্প্রতি গত রোববার তিনিই মধ্যপ্রাচ্যের বিষয়ে সৌদি আরবের নিজস্ব কৌশলের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

একইসঙ্গে ‘যে পথে চললে পুরো অঞ্চল লাভবান হয়’  সে পথে সৌদি আরবকে চলার আহ্বানও জানিয়েছেন রুহানি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত