২৩ জানুয়ারি, ২০১৬ ২৩:০৪
দাবা খেলার বিরুদ্ধে সৌদি গ্রান্ড মুফতির মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন বাংলাদেশের শীর্ষ দাবাড়ুরা। তাঁরা বলেছেন, দাবা এক নির্দোষ খেলা, যাতে বুদ্ধির চর্চা হয় এবং মস্তিষ্ক ক্ষুরধার হয়। খবর বিবিসির।
সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ দাবা খেলাকে সময়ের অপচয় এবং এটি জুয়া খেলা উৎসাহিত করে বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেছেন, এই খেলা মানুষের মধ্যে শত্রুতা এবং ঘৃণা ছড়ায়, তাই মুসলমানদের জন্যে এ খেলা হারাম।
ইউটিউবে তার এই বক্তব্য প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে। কিন্তু সম্প্রতি এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা এবং বিতর্ক শুরু হয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।
খ্যাতিমান মহিলা দাবাড়ু রাণী হামিদ বলেন, দাবা খেলা সম্পর্কে সৌদি গ্রান্ড মুফতির এধরণের মন্তব্য শুনে তার খারাপ লেগেছে।
“লোকে হয়তো ভাববে, আমরা বুঝি খারাপ কোন কাজ করছি।”
রাণী হামিদ দাবা খেলছেন চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে। একটানা বারো বছরের বেশি জাতীয় মহিলা দাবায় চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক মাস্টার খেতাব।
“আমরা তো দাবা খেলি সময় কাটানোর জন্য, আনন্দের জন্য। এটা এত নির্দোষ একটা খেলা। দাবা খেললে বুদ্ধির চর্চা হয়, অংকে ভালো করা যায়। কারণ এটা তো বুদ্ধির খেলা।”
“আমি মনে করি পরনিন্দা বা পরচর্চার চেয়ে ঘরে বসে দাবা খেলা তো অনেক ভালো।”
দাবায় বাংলাদেশের প্রথম গ্রান্ড মাস্টার নিয়াজ মোর্শেদও একই ভাষায় সৌদি গ্রান্ড মুফতির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, দাবা খেলা নিয়ে কোন নেতিবাচক পদক্ষেপ কখনও টিকতে পারেনি।
“ভালোবাসা এবং সঙ্গীত যেভাবে আপনাকে আনন্দ দেয়, দাবা খেলা থেকেও আপনি সেই আনন্দ পেতে পারেন।”
নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, “কিন্তু ইরানে দীর্ঘ সময় দাবা খেলা নিষিদ্ধ করেছিলেন। ইরানে এক সময় দাবা খেলা হতো না। কিন্তু নিজেই কিন্তু আবার দশ বছর পর এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন।
সাত বছর আগে গ্র্যান্ড মাষ্টার খেতাব পেয়েছেন বাংলাদেশের হোসেন। তিনিও বলেছেন, দাবা নিয়ে এসব নেতিবাচক কথাবার্তাকে তিনি কোন গুরুত্ব দিতে চান না।
“দাবা খেলার যে সৌন্দর্য, এটা যদি আমরা মানুষকে বোঝাতে পারি, তখন অনেকেই এটাতে আগ্রহী হবে। এটা অনেকটা ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিকের মতো।”
উল্লেখ্য দাবা বাংলাদেশেও যথেষ্ট জনপ্রিয়। বাংলাদেশে পাঁচজন গ্র্যান্ড মাষ্টার এবং ১৪ জন ফিদে গ্র্যান্ড মাষ্টার রয়েছেন।
আপনার মন্তব্য