সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ১০:৫৮

শেয়ালেই নাজেহাল বিমানবন্দর কর্তারা !

তাদের বুদ্ধিতে তাবড় তাবড় অফিসারেরাও নাজেহাল। বৈঠকে বসে পাঁচ মাথা এক করেও সুরাহা খুঁজে পাচ্ছেন না। দেশ-বিদেশের বিমান ওঠা-নামার ব্যবস্থা সামলান তাঁরা। কিন্তু প্যাঁচে ফেলেছে তুচ্ছ চারপেয়ে!

বিমানবন্দর চত্বরে যে ২২টি খাঁচা পাতা রয়েছে, তার মধ্যে আস্ত মুরগির টোপ। কিন্তু শেয়াল বাবাজিদের দেখা নেই। গত পাঁচ বছরে দশটা শেয়ালও ধরা পড়েনি। অথচ তাদের দেখা মিলছে মাঝেমধ্যেই। এমনকী, রানওয়েতেও। ফলে বিপদের আশঙ্কা থাকেই। বিমান ওঠানামার মুখে রানওয়েতে শেয়াল দেখে বিমান থেকে বার্তা পাঠিয়েছেন পাইলট- এমন ঘটনাও নতুন নয়।

কলকাতা বিমানবন্দরের নানা রকম সমস্যা নিয়ে রাজ্যের অফিসারদের একটি বৈঠক হয় দিন কয়েক আগে। সেখানে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এবং বন দফতরের সচিব ছিলেন। সেই বৈঠকে শেয়ালের প্রসঙ্গও ওঠে। ঠিক হয়, বিমানবন্দর ও বন দফতরের কর্তারা যৌথ ভাবে পরিদর্শন করবেন। বিমানবন্দরের রানওয়ের চারপাশে বসত করা শেয়ালদের ধরে কী ভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা যায়, সেটা দেখতে বৃহস্পতিবার পরিদর্শন করেন বিমানবন্দর ও বন দফতরের অফিসারেরা। বন দফতর সূত্রের খবর, রানওয়ের এক পাশে জঙ্গলে শেয়ালের গর্ত দেখা গিয়েছে। বিমানবন্দরের বাইরে থেকেও কোনও ভাবে শেয়াল ঢুকছে বলে মনে করছেন তাঁরা। পরিদর্শনের পরে ঠিক হয়েছে, এ বার থেকে খাঁচাগুলি গাছপালা দিয়ে ঢেকে রাখা হবে। শুধু খাঁচার দরজাটা খোলা থাকবে। ভিতরে থাকবে টোপ। লোভে লোভে শেয়াল ঢুকলেই খাঁচার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। কর্তাদের আশা, চতুর শেয়ালদের এ বার ঠকানো যাবে।

কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা অনিল শর্মা এ দিন বলেন, ‘‘বিমানবন্দরের ভিতরে রানওয়ের পূর্বে নারায়ণপুরের দিকে প্রায় দু’একর জায়গায় কলাগাছের জঙ্গল রয়েছে। বিমানবন্দরের ভিতরে বাকি এলাকা এখন পরিষ্কার করা হয়েছে। ওই কলাগাছের জঙ্গলেই শেয়ালদের বসবাস। সেখানেই ইঁদুর, পাখি, ব্যাঙ ধরে দিব্যি পেট ভরাচ্ছে তারা।’’

কলাগাছের ওই জঙ্গল কেটে ফেললেই তো হয়! অনিলবাবু বলেন, ‘‘তাতে আরও বেশি করে শেয়ালদের রানওয়েতে চলে আসার আশঙ্কা।’’ বন দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিমানবন্দরের ভিতরে থাকা পূর্ণবয়স্ক শেয়াল ধরার পাশাপাশি তাদের বংশবৃদ্ধিও ঠেকাতে হবে। দেখতে হবে খাবারের খোঁজে বাইরে থেকেও শেয়ালরা যাতে ঢুকে না পড়ে।

কী ভাবে হবে এ কাজ? ওই কর্তা বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণ শাখার মুখ্য বনপাল কল্যাণ দাসের নেতৃত্বে থাকা ওই পরিদর্শক দল সব বিষয় খতিয়ে দেখে চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেনের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন। তার পরে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’ তবে নয়া ব্যবস্থা যা-ই হোক, তাতে শেয়ালদের জব্দ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বিমানবন্দরের অফিসারেরা।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত