ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২৫ মার্চ, ২০১৬ ০৮:০২

বেলজিয়ামের নিরপত্তা বাহিনীর কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ

আশঙ্কা সত্ত্বেও হামলা ঠেকাতে না পারায় বেলজিয়ামের পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। ইউরোপের একেবারে প্রাণকেন্দ্র ব্রাসেলসে আইএস জঙ্গিরা এভাবে প্রাণহানি ঘটাল এবং ওই হামলাকারীরা পুলিশের কাছে চিহ্নিত সত্ত্বেও তাদের হামলা রোধে ব্যর্থতার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়ী করা হচ্ছে। দেশটিতে দ্বিতীয় স্তরের সতর্কতা সত্ত্বেও নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে জঙ্গিরা কীভাবে বিমানবন্দরে প্রবেশ করল_ এ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগের প্রস্তাব দেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জান জামবন ও বিচারমন্ত্রী কোয়েন গিনস। তবে প্রধানমন্ত্রী চালর্স মাইকেল এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

বলা হচ্ছে, দুই আত্মঘাতী হামলাকারী সম্পর্কে পুলিশ আগেই জানত এবং হামলাকারী দুই ভাইয়ের একজন ইব্রাহিম আল বাকরাওয়িকে তুরস্ক আটক করে একজন বিদেশি সন্ত্রাসী হিসেবে ফেরত পাঠিয়েছিল। কেন এই সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ সতর্ক থাকল না!

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে বেলজিয়ামের বিচারমন্ত্রী কোয়েন গিনস বলেন, তাকে সম্ভাব্য জঙ্গি বলে জানানো হয়নি, এমনকি ওই ব্যক্তি এ দেশে সন্ত্রাসবাদী বলে চিহ্নিতও নয়। সে সাধারণ সন্ত্রাসী হিসেবে প্যারোলে ছিল।

ব্রাসেলসে হামলার সঙ্গে আসলে কতজন জড়িত তা এখনও নিশ্চিত নয় ব্রাসেলস পুলিশ। এ পর্যন্ত ৫ জনের জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। ব্রাসেলসে বিমানবন্দর ও মেট্রোরেল স্টেশনে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিজেদের উড়িয়ে দেওয়া দুই ভাইসহ তিনজনের পরিচয় মিললেও খোঁজ মিলছে না চতুর্থজনের। বিমানবন্দরের সিসি টিভির ফুটেজ অনুযায়ী এ হামলাকারী নিজের স্যুটকেস বোমার বিস্ফোরণ ঘটাতে না পেরে পালিয়ে যান। মেট্রো স্টেশনের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়া আরেক ব্যক্তি যিনি বিস্ফোরণের আগে আত্মঘাতী এক ভাই খালিদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাকেও খুঁজছে পুলিশ। হামলার ঘটনায় সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউরোপ ভ্রমণে 'সম্ভাব্য ঝুঁকির' ব্যাপারে মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে। একই সঙ্গে গণপরিবহনে ভ্রমণ কিংবা জনসমাগম এলাকাগুলোতে যাওয়ার ব্যাপারেও সতর্কতা জারি করা হয়। ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী তিন মাসের জন্য এ সতর্কতা জারি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ ভ্রমণ-সতর্কতা জারি করে বলেছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো ইউরোপজুড়ে অহরহ হামলার পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। আশপাশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সজাগ থাকুন এবং জনাকীর্ণ স্থান এড়িয়ে চলুন।

এদিকে, ইব্রাহিম ও খালিদের সঙ্গে এক বাসায় থাকা প্যারিস হামলার হোতা সালাহ আবদেসালাম আদালতে জানিয়েছেন, তিনি ব্রাসেলস হামলার ব্যাপারে কিছু জানেন না। বেলজিয়ামের আদালতে গতকাল শুনানির সময় সালামের আইনজীবী এসভেন মেরি জানান, তার মক্কেল এ হামলার ব্যাপারে কিছু জানেন না। তিনি চান তাকে ফ্রান্সে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। প্যারিস হামলার বিচার ফ্রান্সেই হোক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত