ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২১ মে, ২০১৫ ০০:১৮

টার্গেট বাগদাদ!

ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর পরের টার্গেট বাগদাদ। কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ রামাদি দখলের পর আইএসের চোখ এখন বাগদাদের দিকে। রামাদি দখলকে যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের অবনতি বলে উল্লেখ করছে। রামাদি থেকে মাত্র ৭০ মাইল দূরে রাজধানী বাগদাদ। যদিও রামাদি দখলের পর বাগদাদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, আইএস এখন আরও সামনে অগ্রসর হতে চাইবে। তাদের লক্ষ্য এখন বাগদাদ। ইরাকের আনবার প্রদেশের রামাদি শহর ইসলামিক স্টেট (আইএস) দখল করে নেওয়ার পর ব্যাপক সংঘাতের আশঙ্কায় সেখান থেকে পালাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

রামাদিতে কয়েকদিনের সংঘর্ষে এরই মধ্যে অন্তত ২৫ হাজার মানুষ নিরাপত্তার সন্ধানে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বেশিরভাগ মানুষই রাজধানী বাগদাদ অভিমুখে পালানোর চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে ইরাক সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রামাদি পুনর্দখলের লক্ষ্য নিয়ে সরকারি বাহিনীর পাশাপাশি ইরানের সমর্থনপুষ্ট হাজার হাজার শিয়া আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য শহরটির কাছে জড়ো হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি ক্ষমতায় আসার আট মাস পর রামাদি বেদখল হওয়ার ভেতর দিয়ে ইরাক সরকার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। রামাদি থেকে আইএসকে যত দ্রুত সম্ভব হটিয়ে দিয়ে আবাদিও চাচ্ছেন নিজের কাঁধ থেকে এই চ্যালেঞ্জ অপসারণ করতে।

সোমবার তার কার্যালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রামাদিতে নতুন প্রতিরক্ষা ব্যূহ গড়ে তোলার। যুদ্ধরত বাহিনীকে ঢেলে সাজানো এবং তার সঙ্গে আরও সেনা যোগ করারও নির্দেশ দিয়েছেন আবাদি। কিন্তু রামাদি দখল করে সেখানেই বসে নেই আইএস জঙ্গিরা।

সরকারি বাহিনী ও তাদের মিত্র গোষ্ঠীগুলোকে হামলার মাধ্যমে তারা নিজেদের আক্রমণের তীব্রতা ধরে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। রামাদির শক্ত ঘাঁটি থেকে এবার শহরটির পূর্ব দিকের ইরাক সরকারের হাব্বানিয়া সামরিক ঘাঁটির দিকে এগোচ্ছে। সেখানে আইএসকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে হাজার হাজার শিয়া মিলিশিয়া সদস্য এরই মধ্যে জড়ো হয়েছে। খুবই কঠিন যুদ্ধ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আনবার প্রদেশে আইএস খুবই প্রভাবশালী। আনবারের বিশাল এলাকাও তাদের নিয়ন্ত্রণে। এদিকে শিয়া আধাসামরিক বাহিনীকে আইএসবিরোধী এই অভিযানে অন্তর্ভুক্ত করার কারণে আনবার প্রদেশের বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতারা, এমনকি বেশকিছু আদিবাসী গোষ্ঠীর নেতাও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, শিয়া যোদ্ধাদের এ যুদ্ধে যুক্ত করার বদলে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্র সরবরাহ করা উচিত। তাহলেই আইএসবিরোধী অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।

আনবার কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল তারিক আল-আবদুল্লাহ গত সোমবার জানান, সরকারের কাছ থেকে আমাদের আরও বেশি সহযোগিতা দরকার। আমাদের প্রদেশকে আইএসের হাত থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আমাদের নিজেদেরই বিশাল স্বেচ্ছাসেবক গোষ্ঠী প্রস্তুত রয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রও আশঙ্কা করছে রামাদি পুনর্দখলের অভিযানে শিয়া যোদ্ধারা যুক্ত হওয়ার ফলে ইরাকের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিরোধ বাড়বে। গোত্রগত বিবাদে ব্যাপক রক্তপাত ঘটারও আশঙ্কা করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত