জঙ্গি ইসলামিস্ট সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট)-এর মুখপত্র 'দাবিক'-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে তারা পারমাণবিক অস্ত্র সংগ্রহের খুবই কাছাকাছি চলে এসেছে, আর এই অস্ত্র সংগ্রহ তথা কেনা হচ্ছে পাকিস্তান থেকে। এরপর তা অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হবে। ধারণা করা হচ্ছে, আইএসের হাতে পণবন্দি ব্রিটিশ নাগরিক জন কান্টলি প্রবন্ধটির লেখক।

দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে আইএসের হাতে পণবন্দি এই ব্রিটিশ নাগরিক। জন কান্টলি এর আগেও আইএসের হয়ে নানা প্রচারে অংশ নিয়েছেন। এর আগে জঙ্গি মহলে বহুল প্রচারিত 'লেন্ড মি ইয়োর ইয়ার্স' ভিডিওটিতে জন অংশ নিয়েছিলেন।

'দ্য পারফেক্ট স্টর্ম' শিরোনামের প্রবন্ধটিতে লেখা হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র সংগ্রহের বিষয়টি 'এক বছর আগের অবস্থার চেয়ে এখন বেশ বাস্তব।' আইএসের এই দাবি নিয়ে গোয়েন্দা মহলে সন্দেহ থাকলেও বিষয়টিকে হালকাভাবে নিতে রাজি নন তাঁরা। এর বড় কারণ আইএসের আর্থিক ক্ষমতা। এখনো আইএসের হাতে বেশ কিছু তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের খনি আছে। একসময় চোরাবাজারে সেই প্রাকৃতিক সম্পদ বিক্রি করে দৈনিক কয়েক মিলিয়ন ডলার আয় করত আইএস। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বেশ কয়েকটি প্রত্নস্থল থেকে পাওয়া প্রত্নসামগ্রী বিক্রির অর্থ। ফলে আইএসের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র সংগ্রহের মতো অর্থ রয়েছে বলে আশঙ্কা গোয়েন্দাদের।

প্রবন্ধে দাবি করা হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র সংগ্রহের জন্য পাকিস্তানকে নিশানা করছে আইএস। মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র পাকিস্তানের কাছেই পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। প্রবন্ধ অনুসারে, আইএসের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন এজেন্টরা এ বিষয়ে সক্রিয় রয়েছেন। পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। তাঁদের দুর্নীতির সুযোগ নিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র পাওয়ার চেষ্টা চলছে বলে প্রবন্ধে দাবি করা হয়েছে।

বেশ কয়েক মাস ধরে পিছু হটলেও কয়েক দিন আগে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে আইএস। ইরাকের রামাদি দখল করেছে তারা। সিরিয়ায় ইউনেসকোর হেরিটেজ সাইট পালমিরাও আইএসের দখলে চলে এসেছে। আইএসের হয়ে লড়াই করতে সারা বিশ্ব থেকে জিহাদিদের ডাক দিয়েছেন আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি। মার্কিন বিমান হামলায় আহত হয়ে আপাতত শয্যাশায়ী হলেও সেই অবস্থা থেকেই এক অডিও বার্তায় এই আবেদন করেছেন বাগদাদি। পাশাপাশি শুক্রবার সৌদি আরবের একটি গ্রামে শিয়াদের ইমাম আলী মসজিদে আত্মঘাতী হামলা চালায় আইএস। এই হামলায় ২১ জন প্রাণ হারিয়েছে। আহতের সংখ্যা প্রায় ৮০। ফলে আইএসের দাবিকে উড়িয়ে দিচ্ছে না বিশেষজ্ঞ মহল।

পাশাপাশি এ প্রবন্ধে দাবি করা হয়েছে, বিচ্ছিন্নভাবে না থেকে জঙ্গি সংগঠনগুলো আইএসের ছাদের তলায় আসছে। যেমন আফ্রিকার জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম। কিছুদিন আগেই বোকো হারামের তরফ থেকে আইএসের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা হয়। এভাবে আইএস অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে বলেও প্রবন্ধে দাবি করা হয়েছে। সূত্র : দ্য মেইল।