আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৭ এপ্রিল, ২০১৮ ১৯:০৯

দুই কোরিয়ার বৈঠকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে সম্মতি

দুই কোরিয়ার শীর্ষনেতাদের ঐতিহাসিক সম্মেলনের যৌথ ঘোষণায় কোরিয়া উপদ্বীপ সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে অঙ্গীকারের কথা জানানো হয়েছে। শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) দুই দেশের নেতারা এক ঐতিহাসিক বৈঠকে বসার পর এই সিদ্ধান্ত আসেন।

কোরীয় উপদ্বীপে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি বজায় রাখতে পরমাণু নিরস্ত্রকরে কয়েক দশকের বৈরিতার অবসান দুই নেতা করতে চান বলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধ অবসানের ৬৫ বছর পর এবারই প্রথম কোনও উত্তর কোরীয় রাষ্ট্রনায়ক আলোচনার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছান। এর আগে দুই কোরিয়ার নেতারা দুবার আলোচনায় বসলেও দুবারই সেই আয়োজন হয়েছিল পিয়ংইয়ংয়ে।

এবারের বৈঠকের পুরো পরিকল্পনা আগে থেকেই তৈরি করা হয়েছে। বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন দুই দেশের নেতারা। এরপর ঘোষণা আসে তাদের পক্ষ থেকে। মুন জায়ে ইন বলেন, ‘কিমের সাহস ও ইচ্ছাশক্তির প্রশংসা করি আমি।’

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ‘কোরীয় উপদ্বীপকে সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে’ উভয় নেতা একমত হয়েছেন। এছাড়া যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, কোরীয় উপদ্বীপে আর কোনও যুদ্ধ হবে না। ফলে শান্তির এক নতুন যুগের শুরু হবে।

বিবিসি আরও জানায়, যুদ্ধ অবসানের জন্য যুদ্ধবিরতির ৬৫তম বার্ষিকীতে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করবে।

বিবৃতির চুম্বক অংশ তুলে ধরে গার্ডিয়ান জানায়, উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ঐতিহাসিক সম্মেলনে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন এক একমত হন, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তিচুক্তি আলোচনায় বৈঠকে বসবেন।

এছাড়া জানানো হয়, মানবিক সংকটগুলো সমাধানে জরুরি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে দুই দেশ। কোরীয় উপদ্বীপে সৃষ্ট সামরিক উত্তেজনা প্রশমিত করার চেষ্টা করবেন তারা। সেই লক্ষ্যেই মে মাসেই দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা বৈঠক করবেন। আর ১ মে থেকে বন্ধ হবে লাউডস্পিকার ও লিফলেট বিতরণসহ প্রচারণা কার্যক্রম।

বিবৃতিতে জানানো হয়, সামনের শরতেই পিয়ংইয়ং সফরে যাবেন মুন। কিয়াসংয়ে দুই দেশের এক লিয়াজোঁ অফিস স্থাপনে একমত হয়েছেন দুই নেতা।

গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, যৌথ ঘোষণায় কোনও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়নি তবে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে। এতে মূলত উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কোরিয়া যুদ্ধে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া পরিবার থেকে শুরু যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনে গুরুত্ব পেয়েছে।

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টি শুধু একটা অংশে বলা হয়েছে এবং তা সাধারণ ধারণা মাত্র। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণ ও উত্তর নিশ্চিত করছে, কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত রাখার সাধারণ লক্ষ্যের বিষয়ে।’

এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে উভয় নেতা কোরীয় যুদ্ধের অবসানের অঙ্গীকার করেছেন। কিম বলেন, আশা করি অতীতের ভুল আবার করব না আমরা। আমি আশা করি দুই কোরিয়ার মানুষের জন্য অবাধে উত্তর থেকে দক্ষিণে যাতায়াতের একটি সুযোগ। আমাদের ইতিহাসের দায় আমাদেরকেই নিতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত