আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৬ মে, ২০১৮ ১৪:৪৩

বৃদ্ধা মা’কে স্টেশনে ফেলে রেখে গেল ছেলে

সম্পত্তির লোভে বৃদ্ধা মা'কে স্টেশনে ফেলে রেখে গেলেন তারই নিজের সন্তান।

শুক্রবার (২৬ মে) কলকাতার বাঘাযতীন স্টেশনে এমনই এক মা'কে উদ্ধার করে পুলিশ।

জানা যায়, বাঘাযতীন প্ল্যাটফর্মে ওঠা-নামার সিঁড়ির একপাশে জড়োসড়ো হয়ে বসে ছিলেন এই বৃদ্ধা। অপেক্ষা করছিলেন ছেলে আসবে নিয়ে যেতে। কিন্তু সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে গেলেও ছেলে আসলেন না মা'কে নিতে। ভয়, আতঙ্ক আর যন্ত্রণায় অঝোরে কাঁদতে লাগলেন বৃদ্ধা। তার এই কান্না দেখতে পেয়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় হকাররা। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।

পুলিশ ও বৃদ্ধার প্রতিবেশীর কাছ থেকে জানা যায়, ছেলে তার মায়ের খোঁজখবর রাখে না কিন্তু সম্পত্তির লোভ ছাড়তে পারেনি ছেলে। আর তাই নির্যাতন চালাতে থাকেন ওই বৃদ্ধা মায়ের উপর। এমনকি বাড়ি লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করেছেন ছেলে। মারধরও করেছেন বলে অসংলগ্ন কথায় খোদ অভিযোগ করেছেন তাঁর মা-ই।

প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, সম্পত্তির লোভ থেকেই ছেলে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারেন।

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে, বৃদ্ধার নাম সুনীতি সুনীতি হালদার। সত্তর বছরের এই বৃদ্ধা পশ্চিমবঙ্গের সোনারপুরের সুভাষপল্লীতে মেয়ে এবং নাতনীর সাথে থাকেন। এক ছেলে থাকলেও তার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হয় বৃদ্ধা মায়ের। সোনারপুরেই আলাদা বাড়িতে থাকে ছেলে। দুই বাড়ির মধ্যে দূরত্ব বেশি না হলেও মায়ের খোঁজ খবর নেয় না ছেলে।

তবে ছেলের সঙ্গে কী ভাবে ওই দিন তার যোগাযোগ হল সেটা বলতে পারেননি বৃদ্ধা। সোনারপুর থেকে বাঘাযতীন কী ভাবে পৌঁছলেন তিনি সেটাও জানতে পারেনি পুলিশ।

এ ব্যাপারে পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় বৃদ্ধা এতটাই ট্রমায় রয়েছেন যে ভীষণ অসংলগ্ন কথা বলছিলেন। অনেকবার জিজ্ঞাসা করার পর ভাঙা ভাঙা কথায় তিনি নিজের বাড়ির ঠিকানাটা বলতে পেরেছিলেন। আর শুধু বলেছেন ওই দিন ছেলের সঙ্গে তিনি সোনারপুর থেকে বাঘাযতীন এসেছিলেন।

ঘটনার সময় প্ল্যাটফর্মের কয়েকজন যাত্রীর কাছ থেকেই প্রথম ফোনটা পেয়েছিল যাদবপুর জিআরপি। রাত সাড়ে নটা নাগাদ ওই ফোন পেয়েই বাঘাযতীন প্ল্যাটফর্ম থেকে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। বৃদ্ধার মুখ থেকে বাড়ির ঠিকানা জানার পর যোগাযোগ করা হয় সোনারপুর জিআরপিতেও। অবশেষে খোঁজখবর নিয়ে রাত দু’টো নাগাদ সোনারপুর জিআরপির এসআই নিমাইচন্দ্র বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটা দল তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসেন।

ঘটনার পর থেকে সেই ছেলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

আপনার মন্তব্য

আলোচিত