আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৩ জুন, ২০১৮ ১৫:০৪

বোরকা পরতে বাধ্য, প্রতিবাদে ইরান যাচ্ছেন না সৌমা

পোশাকে ফতোয়া! প্রতিবাদে ইরানে এশিয়ান নেশনস কাপ চেস চ্যাম্পিয়নশিপে গেলেন না ভারতীয় মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার সৌমা স্বামীনাথন।

ইরানের হামাদানে ২৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত হতে চলা এই প্রতিযোগিতায় প্রত্যেক দাবাড়ুকে বাধ্যতামূলক ভাবে মাথায় স্কার্ফ পরতে বলা হয়েছিল। জুনিয়র পর্যায়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন  হওয়া সৌমা এরই প্রতিবাদে প্রতিযোগিতায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে ৫ নম্বরে এবং বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ৯৭ নম্বরে থাকা ২৯ বছরের সৌমা তাঁর ফেসবুকের পাতায় লিখেছেন, “ইরানের বাধ্যতামূলক ভাবে মাথায় স্কার্ফ পরার নিয়ম আমার মতে মানবাধিকারের বিরোধী। এটা নিজেকে প্রকাশের স্বাধীনতা, ভাবনা-চিন্তার স্বাধীনতা, বিবেক ও ধর্মের বিরোধী। এই পরিস্থিতিতে ইরানে না যাওয়াই আমার কাছে প্রতিবাদের রাস্তা।”

ক্রীড়াবিদদের ক্ষেত্রে পোশাকে এই জাতীয় ফতোয়ার কোনও জায়গা নেই বলে মনে করেন সৌমা।

তাঁর মতে, “আয়োজকরা যদি আমাদের জাতীয় পোশাক পরতে বলেন, তা তবু মানা যায়। কিন্তু, খেলাধুলার জগতে জোর করে ধর্মীয় পোশাক-বিধি চাপানো যায় না। দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আসন্ন এশিয়ান নেশনস কাপ চেস চ্যাম্পিয়নশিপের ভারতীয় মহিলা দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। জোর করে স্কার্ফ বা বোরখা পরতে পারব না। এত বড় প্রতিযোগিতায় খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধার দিকে লক্ষ্য রাখা না হওয়ায় আমি খুবই হতাশ। যদিও দেশের প্রতিনিধিত্ব করা আমার কাছে বিশাল সম্মানের। আমরা, ক্রীড়াবিদরা অনেক স্বার্থত্যাগ করেই থাকি। সবসময় খেলাকে অগ্রাধিকার দিই। কিন্তু, কিছু ব্যাপারে সমঝোতা করা যায় না।”

প্রথমে এশিয়ান টিম চেস চ্যাম্পিয়নশিপ হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশে। তারিখটাও আলাদা ছিল। সেই সময় ভারতীয় দলের সঙ্গে খেলতে যাওয়ায় সম্মতি দিয়েছিলেন বলে জানালেন সৌমা।

তিনি বলেন, 'যখন নতুন ভেনু আর তারিখের কথা জানলাম তখন ভেঙে পড়েছিলাম।'

এই টুর্নামেন্ট ইরানে করার জন্য কি ভারতীয় দাবা ফেডারেশনের প্রতিবাদ করা উচিত? এই প্রশ্নের জবাবে পুনের মহিলা দাবাড়ু বলেন, 'সবারই আমার মতোই মতামত হবে এটা আশা করি না।'

তবে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, 'চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনের সময় ও ভেনু ঠিক করার সময় খেলোয়াড়দের অধিকার ও সুবিধের কথা একবারও ভাবা হয় না, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।'

আপনার মন্তব্য

আলোচিত