২২ জুন, ২০১৮ ১৬:৩৫
দুই বছর আগে জাকার্তার প্রাণকেন্দ্রে হওয়া আত্মঘাতী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী এক ধর্মীয় নেতাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার একটি আদালত।
জেলে থাকা অবস্থাতেই ২০১৬ সালে জাকার্তায় এক আত্মঘাতী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী আমান আবদুররহমান নামে ৪৬ বছর বয়সী এই ধর্মীয় নেতার ছকেই ওই জঙ্গি হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তাদের।
শুক্রবার (২২ জুন) এ মামলার রায় ঘোষণা করেন দেশটির একটি আদালত।
জাকার্তার স্টারবাকসে হওয়া ওই আত্মঘাতী হামলায় চারজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। অভিযুক্ত আবদুররহমান স্থানীয় একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবেও পরিচিত, জানিয়েছে বিবিসি।
দেশটির পুলিশ বলছে, স্টারবাকসের ওই হামলাই ছিল ইন্দোনেশিয়ায় ইসলামিক স্টেটের যোগসাজশে চালানো কোনো জঙ্গি কর্মকাণ্ড। তবে হামলার প্রায় অর্ধযুগ আগে থেকেই জেলে ছিলেন আবদুররহমান। সেখানে বসে তার করা পরিকল্পনায় হামলাটি চালিয়েছিলেন তিনি।
সেবারের সন্ত্রাসী হামলায় স্টারবাকস ছাড়াও পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকি বিস্ফোরিত হয়েছিল।
শুক্রবার মামলার রায়ে আবদুররহমানকে ‘জঙ্গি কর্মকাণ্ড’ চালানোর দায়ে অভিযুক্ত করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। তার বিরুদ্ধে গত বছর জাকার্তার বাস স্ট্যান্ডে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে তিন পুলিশ সদস্য হত্যা এবং বর্নিও দ্বীপের সামারিন্দার চার্চে হামলা চালানোর ঘটনায়ও জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
এসব হামলার সময়ও কারাগারে যাবজ্জীবন সাজা খাটছিলেন ইন্দোনেশিয়ার জেমা আনসারুত দৌলাহর (জেএডি) আধ্যাত্মিক এই নেতা।
তবে বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা হামলার অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করে আসছিলেন তিনি।
বিদেশি দূতাবাস ভবন ও জাতিসংঘের বিভিন্ন দপ্তরের কাছাকাছি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্রকে কেন্দ্র করে চালানো ওই হামলার সময় স্টারবাকস ভবনের ভেতরে আশ্রয় নেওয়া বন্দুকধারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি বিনিময়ও হয়েছিল।
হামলাকারী চারজনের মধ্যে দু’জন বোমায় নিজেদের উড়িয়ে দিয়েছিলেন, গোলাগুলিতে মারা পড়েন বাকি দু’জন।
বিশ্বের অন্যতম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একের পর সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলেও ২০১৬ সালের ওই আত্মঘাতী হামলাতেই ইসলামিক স্টেট প্রথম দায় স্বীকার করেছিল।
চলতি মাসেও দেশটির সুরাবায়া এলাকার তিনটি চার্চ ও পুলিশ সদরদপ্তরে কয়েক দফা আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে।
৯ ও ১২ বছর বয়সী দুটি মেয়েসহ ছয় সদস্যের একটি পরিবার চার্চগুলোতে হামলা চালিয়েছিল বলে পরে জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
হামলায় ১১ জন নিহতের পর একে ২০০৫ সালের পর ইন্দোনেশিয়ায় সংঘটিত সবচেয়ে প্রাণঘাতী জঙ্গি আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ১৩ বছর আগে বালিতে হওয়া ওই সন্ত্রাসী হামলায় ২০ জন নিহত হয়েছিলেন।
আপনার মন্তব্য