আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৭ জুলাই, ২০১৮ ২১:১৭

আদালত পাড়াতেই ১৭ ধর্ষককে পেটালেন আইনজীবীরা

অজ্ঞান করে ১২ বছর বয়সী বধির এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৭ ধর্ষককে আদালত চত্বরেই পেটালেন ৫০ জন আইনজীবীর একটি দল। ভারতের চেন্নাইয়ের আদালত পাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে।

মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের আদালতে তোলা হলে ৫০ জন আইনজীবীর একটি দল তাদের মারধর শুরু করে। এসময় তাদেরকে নিরাপদে সরিয়ে নেয় পুলিশ।

আইনজীবীদের অ্যাসোসিয়েশন অভিযুক্ত ধর্ষকদের কারো পক্ষে ওকালতি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি অভিযুক্তকে আইনি সহায়তা দেওয়া হলেও তার বিরোধিতা করবেন বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবীরা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, চেন্নাইয়ের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের নিরাপত্তারক্ষী, লিফটম্যান এবং প্লাম্বার সহ অন্তত ২২ জন ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। ওই দুর্বৃত্তরা ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরীটিকে ইনজেকশন এবং মাদকমিশ্রিত পানীয় পান করিয়ে অজ্ঞান করে ধর্ষণ করত।

ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তা ওই কিশোরীকে দেখিয়ে ব্লাকমেইল করে চলত আরো ধর্ষণ। এভাবে প্রায় ছয় মাস তাকে ধর্ষণ করা হয়। গত ৬ মাস ধরে তাদের হাউজিং কমপ্লেক্সের মধ্যেই তাকে ক্রমাগত ধর্ষণ করে আসছিল ২৩ থেকে ৬৬ বছর বয়সী ২২ পুরুষ। অবশেষে গত ১৩ জুলাই অসম্ভব পেটে যন্ত্রণা অনুভব করায় কিশোরী মুখ খোলে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানায়, অত্যাচারের শুরু হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। রবি নামে ৬৬ বছরের লিফট চালক ওই কিশোরীকে হাউজিং কমপ্লেক্সেরই এক নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। কিশোরীটি ভয়ে বাড়িতে কিছু না জানানোয় পেয়ে বসে রবি। দিন কয়েক বাদে আবার সে কিশোরীর উপর চড়াও হয়।

এবার সঙ্গে ছিল আরও দুজন, তারা বাইরের লোক। তিনজনেই মদ্যপ ও মাদকের প্রভাবে ছিল বলে জানিয়েছে কিশোরীটি। ওইদিন তাকে গণধর্ষণ করা হয়। সে ঘটনার ভিডিও তুলে কিশোরীটিকে ভয় দেখানো হয়। ঘটনার কথা কাউকে জানাতে বারণ করা হয়। কিশোরীটিও ভয়ে কাউকে কিছু জানায়নি।

এরপর থেকে ওই কিশোরীর ধর্ষণ প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। বাড়তে থাকে ধর্ষকের সংখ্যা। তারা অ্যাপার্টমেন্টের গেটে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করত। স্কুল থেকে ফেরার পথেই ওই কিশোরীকে পাকড়াও করত তারা। তারপর কখনও ওয়াশরুমে, কখনও টেরাসে, কখনও জিমে কখনও বেসমেন্টে কখনো বা ফাঁকা থাকা কোনও ফ্লোরে নিয়ে গিয়ে তার উপর চলত অত্যাচার।

কিশোরীর মা জানিয়েছেন, কাজের সূত্রে কিশোরীর বাবা সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তার দিদি পড়াশোনা করতে অন্য শহরে থাকে। কিশোরীর স্কুল থেকে ফিরতে দেরী হচ্ছে দেখে তিনি মনে করতেন খেলাধুলা করতে গিয়ে দেরী হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি জেনেছেন, সেই সময়ে তাঁর মেয়ের উপর চলত চরম অত্যাচার।

কখনও ধর্ষণের সময় তার চোখমুখ বেঁধে দেওয়া হত, কখনও তার গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হত বেল্ট, কখনও বা তাকে মাদক মেশানো ঠাণ্ডা পানীয়ও খাইয়ে দেওয়া হত। ছয় মাসের এই অত্যাচারের পর অসম্ভব পেটে ব্যথা হওয়াতেই বাধ্য হয়ে সব ঘটনা দিদিকে জানায় কিশোরীটি। তারপরই বাড়ির লোকজন সব কথা জানতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

আপনার মন্তব্য

আলোচিত