আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৬ জুলাই, ২০১৮ ১৫:২৯

ফল ঘোষণায় বিলম্ব, এগিয়ে ইমরানের দল

ভোট গ্রহণের ২৩ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন।

বুধবারের (২৫ জুলাই) ওই নির্বাচনে নানা কেন্দ্র থেকে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এগিয়ে থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে; তবে তা প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচনে বড় ধরনের কারচুপির অভিযোগ এনেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন।

সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে ভোটের ফল বিলম্বের কারণ হিসেবে যান্ত্রিক ত্রুটিকে দায়ী করেছে নির্বাচন কমিশন।

ডন জানায়, নির্বাচনে বুধবার সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ২৭২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট তিন হাজার ৪৫৯ প্রার্থী। ভোট গ্রহণের পর শুরু হয় গণনা। রাতভর ভোট গণনা চললেও বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মাত্র ৪৭ শতাংশ ভোট গণনা শেষ হয়েছে।

সর্বশেষ পাওয়া তথ্যানুযায়ী, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের (এনএ) ১১৪টি আসনে পিটিআই এবং ৬৮টি আসনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) বা পিএমএল (এন) এগিয়ে আছে আর বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এগিয়ে আছে ৪২টি আসনে।

ইমরানের এগিয়ে থাকার খবরে বিভিন্ন জায়গায় বিজয় উল্লাস করেছেন তার দলের সমর্থকরা। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে সাবেক এই ক্রিকেটার এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি; এমনকি কোনও বিবৃতি বা টুইটও করা হয়নি তার দলের পক্ষ থেকে।

ইমরান খানের মুখপাত্র নিয়ামুল হক এক টুইট বার্তায় বলেছেন, 'নির্বাচনে তার দলকে সমর্থনের জন্য ইমরান খান দুপুরে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন।'

প্রাথমিক ফলাফলে ধারণা করা হচ্ছে, ইমরান খানের দল এগিয়ে থাকলেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে তাকে সরকার গঠনের জন্য জোট বাঁধতে হতে পারে।

এদিকে ভোররাত ৪টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের ফল প্রকাশ বিলম্বের কারণ হিসেবে 'যান্ত্রিক ত্রুটিকে' দায়ী করা হয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ রাজা খান 'গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায়' অংশ নেওয়ার জন্য পাকিস্তানের জনগণকে অভিনন্দন জানান। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচনে সহায়তার জন্য নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপত্তা কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রমাণ করে দিব; আমরা সঠিকভাবেই দায়িত্ব পালন করেছি।

ব্যাপক বিচারিক ক্ষমতা নিয়ে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার সেনাসদস্যের বিতর্কিত উপস্থিতির মধ্যেই বুধবার ভোট হয় পাকিস্তানে।

দেশটিতে জাতীয় পরিষদের ২৭২ আসনে সরাসরি ভোট গ্রহণ হয়। কোনো দলকে সরকার গঠনের জন্য সরাসরি ভোটে ১৩৭ আসনে বিজয়ী হতে হবে।

দেশটির প্রায় ১০ কোটি ৬০ লাখ নিবন্ধিত ভোটারের রায়ে এখন নির্ধারিত হতে যাচ্ছে আগামী পাঁচ বছরের জন্য পাকিস্তানের মজলিশ-ই-সূরা বা সংসদের ভাগ্য। জাতীয় সংসদ ও চারটি প্রদেশের প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করছে পাকিস্তানের জনগণ।

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই পাকিস্তানে একবার বেসামরিক, একবার সামরিক- এভাবেই শাসনের পালা চলছে। তবে দেশটির ইতিহাসে এবারই দ্বিতীয়বারের মতো এক বেসামরিক সরকার পূর্ণ মেয়াদ শেষে আরেক বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে যাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত