১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ২১:০৩
রোহিঙ্গা গণহত্যায় প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার কারণে বিশ্বজুড়ে নিন্দিত মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর বা সরকারপ্রধান অং সান সু চি আসন্ন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনেও যোগ দেবেন না।
রাখাইনে গণহত্যার কারণে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদন এবং এ নিয়ে নেপিদোর ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র চাপের মধ্যে জানা গেলো খবরটি।
বিশ্বনেতাদের তোপের মুখে পড়ার শঙ্কা থেকে সম্প্রতি নেপালে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনেও যোগ দেননি একসময় শান্তিতে নোবেলজয়ী এই নেত্রী। এবার মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সু চির জাতিসংঘে না যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালো স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য সেভেন ডে ডেইলি’ ।
বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সু চি যাবেন না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব মি ইয়ান্ট থু।
থু স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সু চির পরিবর্তে সরকারের দু’জন ঊর্ধ্বতন মন্ত্রী কিয়াও টিন্ট সোয়ে ও কিয়াও টিন আসন্ন অধিবেশনে অংশগ্রহণ করবেন। তারা রোহিঙ্গা ‘প্রত্যাবাসনের’ বর্তমান পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ‘সহযোগিতার’ বিষয়টি তুলে ধরবেন। তবে এ নিয়ে সু চি’র কার্যালয়ের মুখপাত্র জ্য তাই মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে রাখাইনে সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞের মুখে দেশটি থেকে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে বিদেশ যাত্রা এড়িয়ে চলছেন সু চি।
গত বছরের সেপ্টেম্বরেও তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেননি। রোহিঙ্গা গণহত্যায় বিশ্বজুড়ে তোপের মুখে পড়ে অনেকটা নীরব হয়ে যান। এরপর আরও ক’টি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ থেকে তিনি বিরত থাকেন, যার সর্বশেষ নজির ছিল বিমসটেক সামিট।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন বিশ্বজুড়েই রোহিঙ্গা নির্যাতন ও নিপীড়নের বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে। সম্প্রতিই জাতিসংঘের প্রতিবেদনে রাখাইনে গণহত্যার অভিযোগ তোলা হয়েছে এবং যার জন্য সেনাবাহিনীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত বলে মন্তব্য করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও (আইসিসি) বলেছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত ঘটনা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ কি-না, সেই বিষয়ে তদন্ত করার এখতিয়ার তারা রাখে। এসব বিষয়ে জাতিসংঘ অধিবেশনেও গুরুত্ববহ আলোচনা হবে বলে আশা করা যায়।
এমনিতেই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বেকায়দায় থাকা সু চি খুব স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বনেতাদের সম্মিলনস্থল এড়ানোর চিন্তা থেকে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে আসছেন না বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
আপনার মন্তব্য