আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০ অক্টোবর, ২০১৮ ১৬:৪৮

ইস্তাম্বুলের কনসুলেটেই খাশুগজির মৃত্যু, সৌদির স্বীকারোক্তি

ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটের ভেতরেই সাংবাদিক জামাল খাশুগজির মৃত্যু হয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছে সৌদি আরব।

শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) দেশটির রাষ্ট্রায়াত্ত টেলিভিশনে সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেলের এক বিবৃতির বরাতে খবরে বলা হয়, কনসুলেটে ‘মারামারিতে’ জড়িয়ে পড়ার পর জামাল খাশুগজির মৃত্যু হয় বলে ‘প্রাথমিক তদন্তে’ দেখা গেছে।

বিবিসি জানায়, ওই বিবৃতিতে এ ঘটনায় সৌদি গোয়েন্দা দপ্তরের উপ প্রধান আহমেদ আল-আসিরি এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সৌদ আল-খাতানিকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি ১৮ জনকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি আরবের ওই ব্যাখ্যা ‘হয়ত সঠিক’। তিনি ওই ঘটনাকে ‘অপ্রত্যাশিত’ বললেও সৌদি আরবকে বর্ণনা করেছেন যুক্তরষ্ট্রের ‘গুরুত্বপূর্ণ মিত্র’ হিসেবে।

সাংবাদিক জামাল খাশুগজির অন্তর্ধানের দুই সপ্তাহ পর সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করা হল।

সৌদি যুবরাজের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাশুগজি এক বছর আগে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান। তিনি ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লিখতেন। বিয়ে করার জন্য ব্যক্তিগত কাগজপত্র নিতে গত ২ অক্টোবর তিনি ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটে যান। সেখান থেকে তিনি আর বেরিয়ে আসেননি।

কনসুলেটের ভেতরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে তুরস্কের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই দাবি করা হলেও সৌদি আরব তা ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলে আসছিল।

কিন্তু খাশুগজির অন্তর্ধান রহস্যে একের পর এক রোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকলে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। সৌদি আরবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি ওঠে তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ভেতর থেকেও।

তুরস্কের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে জানা যায়, ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটে ঢোকার আগে খাশুগজি তার অ্যাপল ওয়াচের রেকর্ডিং চালু করেন এবং তার আইফোন রেখে যান তার বাগদত্তার কাছে।

ভেতরে যা যা ঘটেছে, তার অডিও রেকর্ড আইক্লাউডে জমা হয়েছে এবং সেখানে তার ওপর নির্যাতন ও হত্যার প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করা হয় তুর্কি কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে।

বলা হচ্ছে, খাশুগজিকে হত্যা করার পর তার দেহ টুকরো টুকরো করে সরিয়ে ফেলা হয়। সৌদি আরব থেকে আসা ১৫ সদস্যের একটি দল ওই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। হত্যাকাণ্ডের পর তারা দ্রুত তুরস্ক ছেড়ে চলে যান।

তুর্কি সংবাদপত্রগুলোতে ওই ১৫ জনের ছবি ও পরিচয় প্রকাশ করা হয়, যাদের মধ্যে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান এবং যুবরাজের বিশেষ নিরাপত্তা ইউনিটের সদস্যও রয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত