আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:৫৮

দার্জিলিংয়ে শিলাবৃষ্টি, তুষারপাতের শঙ্কা

ছবি:বর্তমান

কনকনে ঠাণ্ডায় কাঁপছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং। পাঁচদিন ধরে পাহাড় ঘেরা দার্জিলিংয়ের আবহাওয়া প্রচণ্ড খারাপ হয়ে আছে। শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) সেখানে প্রচুর পরিমাণ শিলাবৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে দার্জিলিংয়ের ঘুম, জোড়বাংলো, সুখিয়াপোখরিতেও উল্লেখযোগ্য বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া জেলার মানেভঞ্জন, মেঘমা, চিত্রে, ফালুট এলাকাতেও শিলাবৃষ্টি হয়। সেখানে থাকা পর্যটকরা বর্তমানে তুষারপাতের আশংকা করছেন। এই সময়ে সেখানে বেশকিছু পর্যটক রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, আবহাওয়ার যেভাবে পরিবর্তন হচ্ছে তাতে এবার তুষারপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে পাহাড়ে বৃষ্টি শুরু হয়। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই পাহাড় শীত পড়তে শুরু করেছে। শুক্রবারের বৃষ্টির জেরে প্রচণ্ড শীত পড়ে দার্জিলিংয়ে।  শুক্রবার সারাদিনই ভারি বৃষ্টিপাত হয়। পাহাড়ের সকালে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দুপুরের দিকে অবশ্য তাপমাত্রা ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিলো।

জিটিএ’র টাইগার হিল ট্যুরিজম ইনফরমেশনের ইনচার্জ প্রদীপ তামাং বলেন, এবার যেভাবে তাপমাত্রা কমছে তাতে তুষারপাত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময় টাইগার হিল রোজ ২০০ থেকে ২৫০ জন পর্যটক সূর্যোদয় দেখতে আসছেন। কিন্তু আবহাওয়া খারাপের কারণে তাঁরা দেখতে পারছেন না।

দার্জিলিং শহরের ব্যবসায়ী দেওয়ান ভুটিয়া বলেন, এবার যেভাবে ঠাণ্ডা পড়ছে তাতে জ্যাকেট খুব ভালো বিক্রি হবে। প্রতিবছরই ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে শীতের পোশাক বিক্রি শুরু হতো। এবার নভেম্বর থেকেই শীতের পোশাকের বিক্রি জমে উঠেছে।

দার্জিলিং জজবাজারের কয়লা ব্যবসায়ী চন্দন সিং খাওয়াস বলেন, এবার কয়লা বিক্রি বেড়ে গিয়েছে। এখনই এত ঠাণ্ডা পড়ে যাবে কেউ ভাবতে পারেনি। কারণ পাহাড়ের কোনও বাড়িতেই চিমনি ছিল না। কয়েকবছর আগে এমন  ঠাণ্ডা পড়েছিলো। সেসময়ে চিমনির ব্যবসা ভালো হতো। কিন্তু এখন আর আগের মতো ঠাণ্ডা পড়ে না বলে অধিকাংশ বাড়িতেই চিমনি নেই। তাছাড়া কয়লার ধোঁয়ায় দূষণ হয় বলে এখন রুম হিটার ব্যবহার করে অধিকাংশ লোক।

২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এমন ঠাণ্ডা ছিল না। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে দার্জিলিংয়ে ভালো ঠাণ্ডা পড়েছিলো। এবছরের জানুয়ারিতে দার্জিলিং শহরে শিলাবৃষ্টি হয়েছিল। যে শিলাগুলো গলতে প্রায় এক সপ্তাহ সময় লেগেছিল। এর আগে দার্জিলিং শহরে ২০১৫ সালের মার্চ মাসে শিলাবৃষ্টিতে তিন ইঞ্চি পুরু শিল জমে গিয়েছিল।

বর্তমানে এখানকার বাসিন্দারা গতবছরগুলোর তুলনায় বেশি তুষারপাতের আশংকা দেখছেন। দার্জিলিং শহরে ২০০৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে তুষারপাত হয়েছিল। টাইগারহিল, ঘুম এলাকায় ২০১২ সালের জানুয়ারিতে তুষারপাত হয়েছিল। এরপর ছ’বছর কেটে গিয়েছে তুষারপাত হয়নি। বৃষ্টি এবং শিলাবৃষ্টি প্রতি বছর হয়েছে। কিন্তু তুষারপাত না হওয়ায় বার বারই পর্যটকেরা হতাশ হয়েছেন। সান্দাকফু এলাকায় প্রতি বছর বরফ পড়ে। কিন্তু বেশি তুষারপাত হয়নি। তুষারপাত না হওয়ার জন্য দূষণ বাড়ছে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দার্জিলিংয়ের পাহাড়ে গাড়ির সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে। পাহাড়ে বৃষ্টিও কমেছে। দূষণের মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে বলে তুষারপাত হচ্ছে না। তবে এবার ডিসেম্বর থেকে যেভাবে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে তাতে তুষারপাত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বর্তমান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত