সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৮:২৮

বিমান-ক্ষেপণাস্ত্র হিন্দুদের পুরাণে আছে, ভারতীয় বিজ্ঞানীদের দাবি

জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন ও যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটনের তত্ত্বকে ভুল বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন ভারতের কয়েকজন বিজ্ঞানী। ১০৬তম ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস সম্মেলনে তারা এ দাবি করেন। এ ছাড়া আধুনিক যুগের উদ্ভাবনী হিসেবে পরিচিত বিমান, নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র ও টেস্টটিউব বেবির কথা হিন্দুদের পুরাণেই রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা। গত বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। খবর বিবিসির।

সাত দিন ধরে চলা বার্ষিক এ বিজ্ঞান সম্মেলনে অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান জি নাগেশ্বর রাও বলেছেন, মহাভারতে এক মায়ের থেকে ১০০ কৌরবের জন্মের কথা বলা হয়েছে। যেটা হয়েছিল স্টেমসেল গবেষণা ও টেস্টটিউব বেবি প্রযুক্তি থেকে। ঘটেছিল কয়েক হাজার বছর আগে। এ দেশে বিজ্ঞান এমনই। ১০০টি মাটির পাত্রে ১০০টি ডিম্বাণু নিষিক্ত করা হয়েছিল। এটা কি টেস্টটিউব বেবি নয়? এমন প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাগেশ্বরের দাবি, পুরাণে রাবণের ২৪ ধরনের উড়োজাহাজ এবং শ্রীলঙ্কায় বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরের একটি নেটওয়ার্ক ছিল। দেবতা রামচন্দ্র অস্ত্র ব্যবহার করতেন, যা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হেনে আবার ফিরে আসত। এটিই প্রমাণ করে হাজার হাজার বছর আগে এ দেশে গাইডেড মিসাইল প্রযুক্তিও ছিল।

নাগেশ্বরের এ বক্তব্য মিলিয়ে যাওয়ার আগেই একই সম্মেলনে নতুন 'আবিস্কার' নিয়ে হাজির হন তামিলনাড়ু বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কে জে কৃষ্ণ। তিনি দাবি করেন, পদার্থবিদ আইজ্যাক নিউটন মহাকর্ষ প্রতিক্রিয়া বলের বিষয়টি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। আইনস্টাইনের তত্ত্বকে 'বিভ্রান্তিকর' বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, মহাকর্ষ তরঙ্গের নতুন নাম হওয়া উচিত 'নরেন্দ্র মোদি তরঙ্গ'।

অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান জি নাগেশ্বর রাও বলেছেন, মহাভারতে এক মায়ের থেকে ১০০ কৌরবের জন্মের কথা বলা হয়েছে।

“যেটা হয়েছিল স্টেম সেল গবেষণা ও টেস্ট টিউব বেবি প্রযুক্তি থেকে। ঘটেছিল কয়েক হাজার বছর আগে। এদেশে বিজ্ঞান এমনই। ১০০ টি মাটির পাত্রে ১০০ টি ডিম্বানু নিষিক্ত করা হয়েছিল। এটা কি টেস্টটিউব বেবি নয়,” বলেছেন তিনি।

কেবল কোষ সংক্রান্ত জ্ঞানই নয়, নাগেশ্বরের বক্তব্যে স্থান পেয়েছে ‘রামায়নে থাকা বিমান-ক্ষেপণাস্ত্রের ধারণা’র কথাও।

ভারতীয় এ পুরাণে রাবণের ২৪ ধরনের উড়োজাহাজ এবং শ্রীলঙ্কায় বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরের একটি নেটওয়ার্ক ছিল বলেও দাবি তার।

“দেবতা রামচন্দ্র অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করতেন; যা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হেনে আবার ফিরে আসত। এটিই প্রমাণ করে হাজার হাজার বছর আগে এ দেশে গাইডেড মিসাইল প্রযুক্তিও ছিল,” বলেন অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়েল উপাচার্য।

নাগেশ্বরের এ বক্তব্য মিলিয়ে যাওয়ার আগেই একই সম্মেলনে নতুন ‘আবিষ্কার’ নিয়ে হাজির হন তামিলনাডু বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কে জে কৃষ্ণ।

তিনি দাবি করেন, পদার্থবিদ আইজ্যাক নিউটন মহাকর্ষ প্রতিক্রিয়া বলের বিষয়টি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন।

আইনস্টানের তত্ত্বকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, মহাকর্ষ তরঙ্গের নতুন নাম হওয়া উচিত ‘নরেন্দ্র মোদী তরঙ্গ’।

বিবিসি বলছে, ২০১৩ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শতবর্ষী ওই সায়েন্স কংগ্রেসে অনেকেই নানান উদ্ভট দাবি নিয়ে হাজির হতে থাকেন। তবে এবারের দাবিগুলো সম্ভবত আগের চেয়েও বেশি কৌতুহলউদ্দীপক।

কেবল বিজ্ঞান সম্মেলনেই নয় অন্যান্য অনুষ্ঠানেও বিশেষত ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতারা রামায়ন-মহাভারতেই বিজ্ঞানের অসংখ্য নিদর্শন আছে বলে দাবি করে আসছেন।

গত বছর ভারতের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যপাল সিং প্রকৌশলীদের এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও রামায়নেই বিমানের কথা উল্লেখ আছে বলে দাবি করেছিলেন।

রাইট ভ্রাতৃদ্বয়েরও আট বছর আগেই শিবকর বাবুজি তালপাড়ে নামের এক ভারতীয় ওড়ার উপযোগী বিমান বানিয়েছিলেন বলেও দাবি তার।

২০১৪ সালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে উপস্থিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তৃতায় প্রাচীন ভারতে কসমেটিক সার্জারির নিদর্শন ছিল বলে দাবি করেছিলেন। এক্ষেত্রে হাতির মাথাওয়ালা দেবতা গণেশকে উদাহরণ হিসেবেও হাজির করেছিলেন তিনি।

সমালোচকরা বলছেন, প্রাচীন ভারতের পুরাণগুলো পড়ে এখনো আনন্দ পাওয়া গেলও সেখানে বিজ্ঞানের নিদর্শন খোঁজার এ ধরনের চেষ্টা আদতে ‘চূড়ান্ত মূর্খামি’।

ভারতের সায়েন্টিফি কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশন বিজ্ঞান সম্মেলনের বক্তাদের মন্তব্যে ‘গুরুতর উদ্বেগ’ জানিয়েছে।

সংস্থাটির জেনারেল সেক্রেটারি প্রেমেন্দু পি মাথুর বলেছেন, “আমরা তাদের ধারণার সঙ্গে মোটেও একমত নই। তাদের মন্তব্যগুলো থেকে নিজেদের দূরে রেখেছি।”

বিজ্ঞান সম্মেলনে এসব বক্তব্য ‘দুর্ভাগ্যজনক’, মন্তব্য তার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত