ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২৯ জুলাই, ২০১৫ ১৯:২৭

তালেবান নেতা মোল্লা ওমরের মৃত্যু খবরের সত্যতা নিশ্চিত করল পাকিস্তান

আফগান তালেবান শীর্ষ নেতা মোল্লা ওমরের মারা যাওয়ার খবরের সত্যতা স্বীকার করলেন পাকিস্তানের প্রশাসন। এক মিডিয়া রিপোর্টের দাবি, এ নিয়ে পাকিস্তান কর্তাদের সঙ্গে আফগানিস্তান সরকারের প্রতিনিধিদের মধ্যেও আলোচনা হয়েছে।

‘দি খামা প্রেস’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান সরকারের কর্তারা ওমরের মৃত্যুর খবর সঠিক বলে দাবি করার পর আফগান মন্ত্রিসভার বৈঠকেও তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাক প্রশাসনের অফিসারদের দাবি, দু বছর আগেই নিহত হয়েছে ওমর। তবে কোন পরিস্থিতিতে সে মারা গিয়েছে, সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।

সম্প্রতি পাকিস্তানের মুরী শহরে এই প্রথম শীর্ষ আফগান অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে তালেবান প্রতিনিধিরা। কিন্তু তারাও ওমর সম্পর্কে কিছু জানায়নি

কিছুদিন আগেই তালেবানের একটি দলছুট গোষ্ঠী দাবি করে, ওমরকে হত্যা করেছে তালেবানেরই দুই নেতা মোল্লা আখতার মহম্মদ মনসুর ও গুল আগা।

দি আফগানিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট ফিদাই মাহাজ নামে তালেবান ভেঙে বেরনো গোষ্ঠীর মুখপাত্র কারি হামজা দাবি করে, দু বছর আগে ২০১৩-র জুলাইয়েই প্রাণ হারায় ওমর। এই দাবির সমর্থনে তার হাতে তথ্যপ্রমাণ আছে বলে জানায় সে।

ওমরের মারা যাওয়ার খবরটি সঠিক, এমন ইঙ্গিত দিয়েছিল আফগানিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা দি ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট অব সিকিউরিটি। তারা গত নভেম্বরে বলেছিল, ওমর সম্ভবত মারা গিয়েছে। তার মৃত্যুর জেরে ভেঙে তিন টুকরো হয়ে গিয়েছে তালেবান।

২০০১ সালে আমেরিকার নেতৃত্বে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযানের পর থেকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি ‘একচোখো’ ওমরকে।

ওমর ১৯৬০ সালে কান্দাহার প্রদেশের খাকরেজ জেলার চাহ-ই-হিম্মাত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম মোল্লা মোহাম্মদ উমর “মুজাহিদ”ল। তিনি হোটাক নৃগোষ্ঠীর তোমজি গোত্র থেকে এসেছেন।

তার বাবার নাম মৌলভি গুলাম নবি, যিনি একজন “শ্রদ্ধেয় পণ্ডিত এবং সামাজিক নেতা” ছিলেন। ওমরের জন্মের পাঁচ বছর পর তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর ওমরদের পরিবার উরুজগান প্রদেশে চলে যায়।

সোভিয়েত ইউনিয়নের সেনারা আফগানিস্তান দখল করে নিলে ওমর মাদ্রাসার পড়াশোনা ছেড়ে “ধর্মীয় দায়িত্ব” পালনে জিহাদিতে পরিণত হন। ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন। এ সময় তিনি চারবার আহত হয়েছিলেন এবং তার ডান চোখ হারান।

১৯৯২ সালে আফগানিস্তানে কমিউনিস্ট শাসন অবসানের পর দেশটির যুদ্ধবাজ নেতারা 'গোষ্ঠীগত হানাহানিতে” জড়িয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে ১৯৯৪ সালে ওমর দেশটির ইসলামি মুজাহিদদের নেতৃত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং হানাহানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন।

এরপর ১৯৯৬ সালে তাকে বিশ্বাসীদের নেতা বা “আমির-উল-মোমেনিন” খেতাব দেয়ার মাধ্যমে সর্বোচ্চ নেতা মনোনীত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মোল্লা ওমরকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য এক কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে রেখেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত