আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৫ মার্চ, ২০১৯ ১২:৪৫

ট্রুডো সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ আরেক মন্ত্রীর

সরকারের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী জেন ফিলপট। তিনি বলেন, সরকারের দুর্নীতি তদন্ত পরিচালনার বিষয়ে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলায় তিনি পদত্যাগ করছেন।

সোমবার এ ঘোষণা দেন তিনি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ট্রেজারি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট জেন ফিলপট বলেন, ‘আমাকে অবশ্যই মূল নীতি, নৈতিক দায়িত্ববোধ, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়ে অটল থাকতে হবে।’

ফিলপটের পদত্যাগের বিষয়টি জাস্টিন ট্রুডোকে হতাশ করলেও তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে কানাডীয় কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার বিচারে সরকারের হস্তক্ষেপের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ট্রুডো।

ফিলপট তার পদত্যাগপত্রে বিস্তারিতভাবে লিখেছেন যে এসএনসি-লাভালিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় হস্তক্ষেপ করার জন্য রাজনীতিবিদেরা সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেলকে চাপ দিচ্ছেন—এমন প্রমাণে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

এক বিবৃতিতে ফিলপট বলেন, কারও নীতির ওপর কাজ করার জন্য মূল্য দিতে হয়, তবে এর চেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয় তাদের পরিত্যাগ করার জন্য। তিনি তার চিঠিতে লেখেন, এই মন্ত্রিসভার হয়ে দায়িত্ব পালন একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয় তার জন্য।

এর আগে ফেব্রুয়ারিতে একই ইস্যুতে আইনমন্ত্রী জোডি উইলসন-রেবোল্ড পদত্যাগ করেন।

গত সপ্তাহে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি লিবারেল প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জরিপে দেখা গেছে, অক্টোবরে জাতীয় নির্বাচনের আগে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা বেশ কমেছে।

উল্লেখ্য, নির্মাণ ও প্রকৌশল খাতে বিশ্বের অন্যতম জায়ান্ট কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে কানাডার লিবারেল পার্টির সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত লিবিয়ায় সরকারি কর্মকর্তাদের ৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার ঘুষ দিয়ে বড় কয়েকটি প্রকল্পের কাজ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এসএনসি-লাভালিনের বিচার শুরু হয় ২০১৫ সালে। দুর্নীতির মাধ্যমে ঠিকাদারি পেতে এসএনসি-লাভালিন লিবিয়া সরকারকে ১৩ কোটি মার্কিন ডলার জালিয়াতি করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ায় ‘অসদুপায় অবলম্বনের’ অভিযোগে ২০২৩ সালে পর্যন্ত নিজেদের কোনো প্রকল্পে এসএনসি-লাভালিনকে নিষিদ্ধ করে বিশ্বব্যাংক। এসএনসি-লাভালিনকে সাজা না দিতে সরকারি কৌঁসুলিদের নির্দেশ দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে সরকার—এমন অভিযোগ উঠেছে।

দুর্নীতির মূলোৎপাটনের ঘোষণা দিয়ে ২০১৫ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল লিবারেল পার্টি। আট মাস পরই কানাডায় আবার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় এসএনসি-লাভালিন ইস্যুতে সৃষ্ট রাজনৈতিক উত্তাপ জাস্টিন ট্রুডোর দলের জন্য বড় বিপদ হতে চলেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত