সিলেটটুডে ডেস্ক

০৯ আগস্ট, ২০১৯ ২০:৪৮

কাশ্মির ইস্যুতে ইমরান সরকারের সমালোচনায় ডন

শ্রীনগরের শহরে ভারতীয় সেনাদের টহল। ছবি: এএফপি

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের সংকট একটি বৈশ্বিক পরিণতিতে রূপ নিতে পারে। কিন্তু পরিস্থিতি যতটা বলিষ্ঠতার মাত্রা দাবি করেছিল, সে অনুসারে পাকিস্তানি আহ্বানে বিশ্বের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। কেবল ফাঁকা আওয়াজের নিন্দা ছাড়া আর কিছু আসেনি, যা কেবল বাকচাতুরিতায় ভরা; এমনই বলছে পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন। কাশ্মির ইস্যুতে বিশ্বজনমত গড়ে তুলতে না পারায় গণমাধ্যমটি ইমরান খানের সরকারের সমালোচনা করেছে।

ডন বলছে, সত্যিকার অর্থে কাশ্মিরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসনের সুবিধা কেড়ে নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি দেশ ভারতের মিথ্যা দাবিকেই মেনে নিয়েছে। অথচ কাশ্মির হচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিরোধপূর্ণ অঞ্চল, যেটির বিশেষ মর্যাদা ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে দাবি করছে ভারত।

সৌদি আরবও যা একটু মৃদু প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তাতে কোনো মতামত প্রকাশ না করে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের সুখ-দুঃখের বন্ধু চীন একটি জোরালো বিবৃতি পেশ করেছে। কিন্তু তাও শুধু লাদাখ নিয়ে। এ অঞ্চলটি নিয়ে ভারতের সঙ্গে চীনের ভূখণ্ডগত বিরোধ রয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে তুরস্ক এবং পাকিস্তানের প্রতি অনির্দিষ্ট অবিচল সমর্থন ব্যক্ত করেছে। কাশ্মিরে ভারতীয় ধ্বংসযজ্ঞ জাতিসংঘের একাধিক প্রতিবেদনে বিশ্বের কাছে খোলাসা হয়েছে। যা মোদির আমলে আরও ভয়ংকর রূপ নিয়েছে।

জম্মু ও কাশ্মিরের মর্যাদা বদলে যেতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ না নিতে ভারতের প্রতি বৃহস্পতিবার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। এতে তিনি সিমলা চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

এছাড়া, অসহায় কাশ্মিরিদের ওপর ভারতের সাম্প্রতিক নগ্ন আগ্রাসন নিয়ে বৈশ্বিক সামান্য প্রতিক্রিয়া বলে দিচ্ছে পাকিস্তানের কূটনীতি এক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। কেবল নিকট অতীতে না, কেবল মোদির প্রধানমন্ত্রীত্বের সময় না, কয়েক দশক ধরেই এমনটা ঘটছে।

পাকিস্তানে অভিজ্ঞ কূটনীতিকদের কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। বাস্তববাদী রাজনীতিবিদ ও মতামতদাতাদের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, যেখানে ধ্বংসাত্মক নীতিমালা অনুকূল পরিবেশ পেয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বৈরিতা শক্তিশালী হয়েছে এবং কাশ্মির সংকটকে ছোট করতে শত্রুদের সুযোগ করে দিয়েছে।

ভারত সরকার যখন সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করছে, তাতে পাকিস্তান অবাক হয়েছে কেন? সবচেয়ে বড় কথা, উগ্র জাতীয়তাবাদী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পুনর্নির্বাচনের প্রচারে একটি স্তম্ভ ছিল কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা।

কাজেই মোদির এমন অশুভ উদ্যোগকে ঠেকাতে বিদেশি সরকারগুলোতে পাকিস্তানের কোনো লবিং ছিল না। কোনো একটি উদ্যোগ শুরুতে মোকাবেলা করা যতটা না সহজ, সেটি ঘটে যাওয়ার পর তা কঠিনতম হয়ে যায়।

এমনকি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাম্প্রতিক ওয়াশিংটন সফরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত মধ্যস্থতার প্রস্তাব ছিল তার নিজ ইচ্ছাতেই, এতে পাকিস্তানি প্রতিনিধিদের কোনো চেষ্টা ছিল না। যদিও এতে সরকারের ভেতর একটা উচ্ছ্বসিত ভাব দেখা গেছে।

তখন থেকে যেসব খবর প্রচার হয়েছে, তা ছিল স্পষ্টত অপরিপক্ব, প্রসঙ্গের বাইরে এবং পাকিস্তানের কাছ থেকে বিশ্ব যা চাচ্ছে, সেই সীমাবদ্ধতা বিবেচনা না করেই ব্যক্ত করা প্রতিক্রিয়া।

কাজেই পাকিস্তান নিজের জন্য অবশ্যই কী করতে হবে, তা নিয়ে এখানে কিছুটা সন্দেহ রয়েছে। এক্ষেত্রে নিজের অন্তর্দৃষ্টি কাজে লাগাতে হবে যে এমন একটি অনস্বীকার্য ন্যায়সঙ্গত বিষয়েও কীভাবে পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন ও একনিষ্ঠ মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত