আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৪ আগস্ট, ২০১৯ ১১:৫০

হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মক্কায় ফিরছেন হাজিরা

কাবা শরীফে বিদায়ী তাওয়াফ করতে মক্কার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন লাখ লাখ হজযাত্রী। মঙ্গলবার জামারতে শয়তানের উদ্দেশে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন হাজিরা।

সৌদি আরবের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টিপাত সত্ত্বেও বড় ধরণের কোনও ঘটনা ছাড়াই শেষ হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসহ হজের যাবতীয় আয়োজন সফল হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

ইসলামের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভের একটি হচ্ছে পবিত্র হজ। ধারাবাহিকভাবে ধর্মীয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালনের মধ্যদিয়ে হজ পালন করতে হয়। এবারের হজে অংশ নিয়েছেন প্রায় ২৫ লাখ মানুষ। এদের বেশিরভাগই সৌদি আরবের বাইরের নাগরিক।

ইসলামের দুই পবিত্র নগরী মক্কা, মদীনার ব্যবস্থাপনা এবং হজ আয়োজনের কৃতিত্ব পেয়ে থাকে সৌদি আরব। পর্যটন শিল্প সম্প্রসারণে হজে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ানোর আশা করছে দেশটি।

সৌদি হাজী জাসেম আলী হাকাই বলেন, সপ্তাহ ধরে ভালোভাবে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারায় কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ তিনি।

মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফের প্রস্তুতি নিতে নিতে তিনি বলেন, আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কেউ হজে আসে না। অসুস্থতা, ঋণগ্রস্থতা... এ ধরণের সবকিছু থেকে একমাত্র আল্লাহ মুক্তি দিতে পারে আর সেকারণে আপনার যা কিছু চাওয়া তা আল্লাহর কাছে চাইতে পারেন।

পাঁচদিন ধরে নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পালিত হয় হজ। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ করা বাধ্যতামূলক। হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে আরাফাত ময়দানে অংশগ্রহণ।

৯ আগস্ট (শুক্রবার) মিনায় রাত্রি যাপনের পর শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল থেকেই আরাফাত ময়দানে জড়ো হতে শুরু করেন মুসল্লিরা। মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার হেঁটে এখানে যেতে হয়। হাজিরা নামিরা মসজিদ থেকে দেওয়া খুতবা শোনার পর জোহর ও আসরের নামাজ একইসঙ্গে সংক্ষিপ্তভাবে আদায় করেন। তারপর হজ কবুল হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া ও কোরান তেলওয়াতের মাধ্যমে সূর্যাস্তের অপেক্ষা করেন। সূর্যাস্তের পর হাজিরা মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাতের ময়দান থেকে রওনা দেন মুজদালিফার দিকে। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করেন। খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করেন হাজিরা। তারপর মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করেন। মঙ্গলবার ওই পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে।

এরপর পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ করে হজের পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন হাজিরা। হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে যারা আগে মদিনায় যাননি তারা মদিনায় যাবেন। সেখানে হাজিরা সাধারণত ৪০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। পরে শুরু হবে হাজিদের দেশে ফেরার পালা।

এ বছর হজের সময় এক লাখ ২০ হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে নিয়োজিত ছিল প্রায় ৩০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী।

২০১৫ সালে মক্কায় এক সংযোগ সড়কে মুখোমুখি হয়ে পদদলিত হয়ে প্রায় ৮০০ হজযাত্রী নিহত হয় বলে জানায় রিয়াদ। তবে বিভিন্ন দেশে ফেরত যাওয়া মরদেহের হিসাবে নিহতের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। ওই সময়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানায় হাজীরা ভিড় নিয়ন্ত্রণের নিয়ম অনুসরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এই পদদলনের ঘটনা ঘটে। সৌদি বাদশাহ সালমান ওই ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিলেও তার ফলাফল কখনোই প্রকাশ করা হয়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত