সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ আগস্ট, ২০১৫ ১৮:২২

লিবিয়ায় নৌকাডুবি : পাঁচ বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার

লিবীয় উপকূলের কাছে কয়েকশ অভিবাসন প্রত্যাশীকে নিয়ে ডুবে যাওয়া দুটি নৌকায় নিহতদের মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি বলে নিশ্চিত করেছেন তিউনিসিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের লিবিয়া দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা ।

নৌকাদুটির অন্তত দুশ জন অভিবাসন প্রত্যাশী মারা গেছে বলে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

তিউনিসিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের লিবিয়া দূতাবাসের কর্মকর্তা চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মোজাম্মেল হক বলেছেন ডুবে যাওয়া নৌকা দুটিতে মোট ৩১জন বাংলাদেশী ছিল।

নিহতদের মধ্যে দুজন শিশু বলে জানিয়েছেন দূতাবাসের কর্মকর্তা।
লাইফ জ্যাকেট পরে থাকায় বেশিরভাগ বাংলাদেশি অভিবাসন প্রত্যাশীকেই জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে দূতাবাস সূত্র থেকে বলা হয়েছে।

মোজাম্মেল হক বলেছেন, ৪টি পরিবারসহ মোট ৩১জন বাংলাদেশি লিবিয়ার যোওয়ারা এলাকা দিয়ে ট্রলারে করে ইটালি যাবার চেষ্টা করছিলেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।

তবে নৌকার তলদেশে ফুটো থাকায়, প্রায় একঘণ্টা যাওয়ার পরে নৌকাটি উল্টে যায়।

৬ বছর আর ৬ মাস বয়সী দুইটি শিশু সেখানেই মারা যায় বলে মোজম্মেল হক জানাচ্ছেন । আরো দুইটি পরিবারের চারজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। তবে অন্যরা লাইফ জ্যাকেট পরে থাকায় সারারাত ভেসে ছিল। ভোরে তাদের উদ্ধার করা হয়। তাদের লিবিয়ায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

একটি পরিবারের সাথে কথা হয়েছে বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের। এদের দুইটি পরিবার সিরতে থেকে এসেছে, অন্যরা ত্রিপলিতেই বসবাস করতেন।

হক বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এই পরিবারগুলো লিবিয়াতে রয়েছে। সন্তানদের সবার জন্ম হয়েছে লিবিয়ায়। তবে দেশটির পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় তারা সমুদ্রপথে ইটালি যাবার চেষ্টা করছিলেন।

তিনি বলছেন, এর আগেও তারা খবর পেয়েছিলেন যে, এই পরিবারগুলো ইটালি যাবার চেষ্টা করছে। তাদের বারবার সতর্ক করার পরেও তারা ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পথে সেখানে যাবার চেষ্টা করেন।

এখন পরিবারগুলোর ইচ্ছা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র উইলিয়াম স্পিনড্‌লার বিবিসিকে জানিয়েছেন নৌকা দুটিতে প্রায় ৫০০ মানুষ ছিল যারা ইউরোপে আসার চেষ্টায় সমুদ্র পাড়ি দিয়েছিল।

লিবিয়ার উপকূলরক্ষীরা উদ্ধারকৃতদের তীরে আনার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এই নৌকাদুটিতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে সিরিয়া, বাংলাদেশ ও সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলোর নাগরিকরা ছিলেন।

লিবিয়ার উপকূলরক্ষীদের ব্যবহারের জন্য যে উদ্ধারযানগুলো আছে সেগুলোতে উদ্ধারকাজের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই।

সমুদ্রপাড়ি দেবার জন্য অনুপোযোগী নৌকায় লিবিয়া থেকে ইটালিতে সাগরপাড়ি দিতে গিয়ে এ বছর এ পর্যন্ত দু হাজারের মত অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু ঘটেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত