সিলেটটুডে ডেস্ক

২১ নভেম্বর, ২০১৯ ০১:০৮

এটিএম কার্ড জালিয়াতির দায়ে কলকাতায় দুই বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ব্যাংকের এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ওই দুই ব্যক্তি হলেন- মোহাম্মদ হান্নান এবং রফিকুল ইসলাম। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বরাত দিয়ে দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানানো হয়।

দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তারের সময় এটিএম থেকে টাকা তুলে নেওয়া তুরস্কের একটি চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। বাংলাদেশিদের সঙ্গে তুরস্কের দুই এটিএম কার্ড জালিয়াতকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, গত বছর এপ্রিল-মে মাসে কলকাতার বিভিন্ন অংশের যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, গত কয়েক দিন ঠিক সেই রকমই হাল হয় আগরতলার বাসিন্দাদের। নিজের হাতে বা বাড়িতে তাদের ডেবিট কার্ড, অথচ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। এই গ্রাহকদের একটা বড় অংশই স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার। তারা ছোটেন ব্যাংকে। ডজন ডজন অভিযোগ জমা পড়তে থাকে।

অনেকেই ব্যাংকে অভিযোগ জানানোর পর পুলিশেও অভিযোগ জানান। তদন্ত শুরু করেই ত্রিপুরা পুলিশের তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন এটা কোনও কার্ড ক্লোনিং চক্রের কাজ। অর্থাৎ এটিএমে কার্ডের তথ্য নকল করার যন্ত্র লাগিয়ে গ্রাহকদের কার্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নকল করে দ্বিতীয় কার্ড তৈরি করা।

কলকাতাতেও ঠিক একই কায়দায় কয়েক শো মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছিল রোমানিয়ার একটি চক্র। একাধিক এটিএমে পাওয়া যায় কার্ড ক্লোনিং যন্ত্র। ত্রিপুরা পুলিশ, কয়েকটি এটিএমে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুইজন বিদেশিকে চিহ্নিত করে। শহরের বিভিন্ন হোটেলে এবং গেস্ট হাউসে খোঁজ করে জানা যায়, ওই সময়ে আগরতলায় ছিল দুইজন তুরস্কের নাগরিক।

ত্রিপুরা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখার গোয়েন্দারা সন্দেহ করেন, ওই দুই তুরস্কের নাগরিকের সঙ্গে যোগ থাকতে পারে কার্ড জালিয়াতির। সেই অনুযায়ী পুলিশ শুরু করে ওই দুইজনের খোঁজ। সূত্র মেলে, ওই দুইজনই কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সতর্ক করা হয় কলকাতা পুলিশ-সহ আশপাশের সমস্ত পুলিশকে।

ব্যারাকপুর পুলিশ সূত্রে খবর, ত্রিপুরা পুলিশের দেওয়া সূত্র ধরে এগোতে গিয়েই বেলঘরিয়ায় বিটি রো়ড থেকে সামান্য দূরে এল-৯ বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি অ্যাপার্টমেন্টে হদিশ মেলে দুই বিদেশির। তাদের সঙ্গে ত্রিপুরা পুলিশের পাঠানো ছবিরও মিল খুঁজে পান গোয়েন্দারা। তার পরেই দুইজনকে জেরা করা জন্য আটক করা হয়। তাদের নথিপত্র থেকে জানা যায় তাদের নাম হাকান জানবুরকান এবং ফেটাহ আলদেমির।

ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্মকর্তা বলেন, ত্রিপুরা পুলিশের দেওয়া তথ্যের সঙ্গেও মেলে ওই আটক দুাুজনের তথ্য। তাদের ভাড়ার ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া যায় ল্যাপটপ, বিভিন্ন কার্ড সংক্রান্ত তথ্য। জেরায় এর পর তারা স্বীকার করে কার্ড জালিয়াতির কথা।

তদন্তকারীদের দাবি, আটক তুরস্কের নাগরিকদের জেরা করেই হদিশ মেলে বাংলাদেশের নাগরিক মোহম্মদ হান্নান এবং রফিকুল ইসলামের। তারাও ওই চক্রের সদস্য। তারা বেলঘরিয়ার ওই ফ্ল্যাটটি প্রায় ৬ মাস আগে ভাড়া নিয়েছিলেন। এখান থেকেই কয়েক দিনের জন্য কার্ড জালিয়াতি করে বুথ থেকে টাকা তোলার অভিযানে যেতেন বিভিন্ন শহরে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত