সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৫:৫৬

গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার সু চির

রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যার অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও এজেন্ট অং সান সু চি।

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে দ্য হেগের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে সোমবার নোবেলবিজয়ী সু চির এই সাফাই গাইলেন।

রাখাইনে সেনা অভিযানে যা ঘটেছে, গণহত্যার সংজ্ঞার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ কি না- সেই প্রশ্ন তুলে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি বলেছেন, জাতিসংঘের আদালতে গাম্বিয়ার করা মামলা ভুল দিক নির্দেশ করছে।

রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ না করেই তিনি বলেন, রাখাইনে সেনা অভিযানে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ হয়ত উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তবে তার পেছনে গণহত্যার উদ্দেশ্য ছিল- এমন ধরে নেওয়াটাও মিয়ানমারের জটিল বাস্তবতায় ঠিক হবে না।

সু চি বক্তব্যের শুরুতে আন্তর্জাতিক আইন ও সনদসমূহের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে আদালত সহায়তা করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, গণহত্যা সনদের বিধান রুয়ান্ডা এবং সাবেক ইয়োগোস্লাভিয়ায় প্রয়োগ করা হয়নি। গাম্বিয়া বিভ্রান্তিকর তথ্য দাবি করেছে।

মঙ্গলবার আইসিজেতে ১৭ জন বিচারপতির উপস্থিতিতে প্রথম দিনের শুনানি হয়। এদিন আদালতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির উপস্থিতিতে অভিযোগকারী আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু মানবতাবিরোধী নৃশংসতার অভিযোগগুলোর সারাংশ তুলে ধরেন। আজ মিয়ানমারের কর্মকর্তা ও আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন।

গতকাল অভিযোগকারী দেশ গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী তামবাদু বলেন, বিশ্ববিবেকের কালিমা মোচনে আর দেরি করা চলে না। একমাত্র এই আদালতই শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারে, আশা জাগাতে পারে। আন্তর্জাতিক বিচারব্যবস্থাকে অবশ্যই কার্যকর করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আইসিজে মিয়ানমারকে বলুক যে এখনই রোহিঙ্গা শিশুদের হত্যা বন্ধ করতে হবে, নৃশংসতার অবসান ঘটাতে হবে।’

গাম্বিয়ার পক্ষে আদালতে গণহত্যার উদ্দেশ্য, গণহত্যার কার্যক্রম, ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা, গাম্বিয়া এবং মিয়ানমারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির পটভূমি, আদালতের এখতিয়ার এবং অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ হিসেবে কী কী ব্যবস্থা প্রয়োজন, সেগুলো তুলে ধরেন আরও সাত আইন বিশেষজ্ঞ।

রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা ও তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে গাম্বিয়া যেসব অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে—রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যাসহ সব ধরনের নিপীড়ন বন্ধ রাখা, গণহত্যার কোনো আলামত নষ্ট না করা, জাতিসংঘের তদন্তকারীসহ অন্যদের আরাকানে ধ্বংসপ্রাপ্ত রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে অবাধে প্রবেশাধিকার দেওয়া।

মামলায় মিয়ানমারের এজেন্ট অং সান সু চি। তবে, বিকল্প এজেন্ট হিসাবে রয়েছেন স্টেট কাউন্সিলরের দপ্তরের ইউনিয়ন মন্ত্রী চ টিন্ট সোয়ে।

মিয়ানমারের পক্ষে অন্য যেসব আইনজীবী প্রতিনিধিত্ব করছেন তারা হলেন- দেশটির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী ট টিন, যুক্তরাজ্যের এসেক্স চেম্বারসের ক্রিস্টোফার স্টকার, মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং মানবাধিকার বিষয়ের অধ্যাপক উইলিয়াম সাবাস, কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক আইনের পাবলিক ইন্টারন্যাশনাল ল ‘র অধ্যাপক ও কেনিয়ার হাইকোর্টের আইনজীবী মিস ফোবে ওকোয়া, হার্ভাডের আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক অ্যান্ড্রিয়াস জিমারম্যান এবং যুক্তরাজ্যের এসেক্স চেম্বারসের মিস ক্যাথেরিন ডবসন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত