সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ আগস্ট, ২০১৬ ২২:১৯

কারাগারে পৌঁছেছে মীর কাসেমের রিভিউ রায়

যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় প্রকাশের পর ট্রাইব‌্যুনাল হয়ে তা কারাগারে পৌঁছেছে।

এখন এই রায় ফাঁসির আসামি কাসেমকে শোনাবে কারা কর্তৃপক্ষ; জানতে চাইবে, তিনি কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না।

আদালতের সব বিচারিক প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাসেমের সামনে এখন কেবল ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগই বাকি।

সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার মো. সাব্বির ফয়েজ (প্রশাসন ও বিচার) মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৫টায় রায় প্রকাশের কথা জানান।

তিনি বলেন, “বিচারকদের স্বাক্ষরের পর রিভিউ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। ২৯ পৃষ্ঠার এই রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।”

এরপর সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মেহেদী হাসান সন্ধ‌্যা সাড়ে ৬টার দিকে রায়ের অনুলিপি পৌঁছে দেন এ মামলার বিচারিক আদালত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব‌্যুনালে। তার কাছ থেকে অনুলিপি বুঝে নেন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার শহীদুল আলম ঝিনুক।

ট্রাইব‌্যুনালের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সিনিয়র গবেষণা কর্মকর্তা ফাহিম ফেরদৌসের নেতৃত্বে এ আদালতের কর্মকর্তাদের একটি দল কারা মহাপরিদর্শকের উদ্দেশ‌্যে পাঠানো লাল শালুতে মোড়া একটি খাম নিয়ে কেরানীগঞ্জের নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারের পথে রওনা হন।   

রাত ৯টায় রায়ের অনুলিপি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায় বলে জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর জানান।

নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনাল, কারা কর্তৃপক্ষ ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য রায়ের তিনটি অনুলিপি সুপ্রিম কোর্ট থেকে ট্রাইব্যুনালে যায়। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দুই পক্ষের আইনজীবীকেও অনুলিপি পাঠাতে হয়।

ট্রাইব‌্যুনাল ওই রায়ের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেয়। আদেশে ট্রাইব‌্যুনালের বিচারকদের সই নিয়ে রায়ের কপিসহ পাঠাতে হয় কারা কর্তৃপক্ষ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ে।

কারা কর্তৃপক্ষ এখন রায় ও আদেশ পাঠাবে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। একাত্তরের বদর নেতা মীর কাসেম সেখানেই আছেন।

তাকে রিভিউ খারিজের রায় ও আদেশ পড়ে শুনিয়ে প্রাণভিক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে চাইবে কারা কর্তৃপক্ষ।

দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, কাসেম প্রাণভিক্ষা চাইলে তার দরখাস্ত রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের পরই দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

কাসেম আবেদন না করলে, অথবা আবেদন করেও রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা না পেলে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকর করবে। তবে তার আগে স্বজনেরা কারাগারে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ কাসেমের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেয়।

এই বেঞ্চের বাকি চার সদস্য হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ গত ৮ মার্চ মীর কাসেমের আপিলের রায় ঘোষণা করে। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া প্রাণদণ্ডের সাজাই তাতে বহাল থাকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত