ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২০:৫১

৪৫ বছর পরেও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম ওঠাতে পারেননি জোনাব আলী

ঝিনাইদহের বিষয়খালী এলাকায় যুদ্ধ করেছিলেন জোনাব আলী (৫৯)। রনাঙ্গনের সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো তাকে তাড়া করে ফেরে। কিন্তু রনাঙ্গনের এই যোদ্ধার ভরসা এখন কেবল সার্টিফিকেট।

ভারতের মাজদিয়া যুব ক্যাম্পের প্রশিক্ষন নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন জোনাব আলী। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজের নাম তালিকায় ওঠাতে পারেননি। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার হয়েছে। কতো বিতর্কিত ব্যক্তির নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় উঠেছে। কিন্তু জোনাব আলীর ভাগ্য টলেনি। তাঁর নাম ওঠেনি তালিকায় নেই। মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নিজের নাম ওঠাতে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করার কারণে ক্ষুব্ধ, হতাশ এই বীর মুক্তিযোদ্ধা নীরবে নিভৃতে জীবন যাপন করছেন।

জোনাব আলী ১৯৫৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গাগান্না গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবার নাম মৃত ইশারত আলী মন্ডল। যুবক বয়সে ডাক আসে যুদ্ধে যাওয়ার। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। চোখের সামনে অনেক সহযোদ্ধাকে অকাতরে জীবন দিতে দেখেছেন তিনি।

জোনাব আলী জানান, জেবা মুন্সি নামে এক কমান্ডারের অধীনে তিনি বিষয়খালী ফ্রন্টে যুদ্ধ করেন। তিনি হতদরিদ্র হওয়ায় মাজদিয়া যুব ক্যাম্পের প্রশিক্ষন সনদ ছাড়া তাঁর কাছে আর কিছুই নেই। তাঁর সাথেই যুদ্ধ করেছিলেন সদর উপজেলার সাহেব নগর গ্রামের ফজলুর রহমান, ইসাহাক আলী ও আবুল কাশেম। তাঁদের নাম তালিকায় উঠলেও তিনি বছরের পর বছর ঘুরেও নিজের নাম ওঠাতে পারেননি।

মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান, ইসাহাক আলী ও আবুল কাশেমও জানালেন, জোনাব আলী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাঁরা দাবি করেন জোনাব আলীর নাম তালিকাভুক্ত করার।

জোনাব আলী জানান, তিনি এ পর্যন্ত বহুবার ফরম পূরণ করে দিয়েছেন, কিন্তু গেজেটে তাঁর নাম আসেনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন রনাঙ্গনের এই যোদ্ধা। স্টেনগানের গুলিতে পাক বাহিনীকে পরাস্ত করলেও অভাবের কাছে তিনি এখন এক পরাজিত সৈনিক। এটা তাঁর জন্য লজ্জাকর।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে জোনাব আলীর বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারেনি তাঁরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত