সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ জানুয়ারি, ২০১৭ ১৩:১৩

২৩৬৭ গেরিলার স্বীকৃতি বিষয়ে হাই কোর্টের রায় বহাল

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়ন সদস্যদের নিয়ে গঠিত বিশেষ গেরিলা বাহিনীর ২,৩৬৭ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা সম্বলিত গেজেট বাতিল করার প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণার হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধরী। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ঊর্মি রহমান।

২০১৩ সালের ২২ জুলাই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন-২০০২ এর ৭ (ঝ) ধারা মোতাবেক ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের ২৩৬৭ জনের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

পরের বছর ২৯ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ওই গেজেট বাতিল করা হয়। এতে বলা হয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের একই বছরের ১৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সভার সুপারিশ মতে ক্রুটিপূর্ণ ওই গেজেট বাতিল করা হল।

সেই নতুন প্রজ্ঞাপন জারির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও বিশেষ গেরিলা বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার পঙ্কজ ভট্টাচার্য ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। সেই রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট নতুন প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত করে রুল জারি করেন। রুলে নতুন প্রজ্ঞাপনটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

সেই রুলের ওপর শুনানি শেষে ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দানের নির্দেশ প্রদানের নির্দেশ দিয়ে রায় দেয় হাইকোর্ট। এ রায় স্থগিত চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২৪ সেপ্টেম্বর আবেদন করে। শুনানি নিয়ে ৯ অক্টোবর চেম্বার বিচারপতির হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে বিষয়টি ৩০ অক্টোবর শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। ৩০ অক্টোবর আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান এবং রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেন। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।

উল্লেখ্য, ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি গেরিলা বাহিনী গঠন করে মুক্তি সংগ্রামে অংশ নেয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্রসমর্পণ করে ওই গেরিলা বাহিনীর সদস‌্যরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত