সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ মে, ২০১৭ ১৫:২৭

সাঈদী যুদ্ধাপরাধীদের শিরোমণি, রিভিউ খারিজে ব্যথিত অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, রিভিউ খারিজ হওয়ায় চিরদিন একটা ব্যথা রয়ে যাবে। আমার বিবেচনায় সাঈদী ছিল অত্যন্ত ধুরন্ধর। যুদ্ধাপরাধীদের শিরোমণি। তাই তার সর্বোচ্চ দণ্ডের প্রত্যাশা ছিল। তবে সর্বোচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন তা শিরোধার্য।

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা আবেদন) খারিজের পর রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সোমবার (১৫ মে) রিভিউ খারিজের এ রায় দেন। রিভিউ খারিজের ফলে সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড বহাল রইল।

সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি শেষ করেন। এর আগে রোববার সাঈদীর পক্ষে রিভিউ শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর।

হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার এক বছর পর ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হয়।

২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রিভিউ আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর পাঁচ দিন পর ১৭ জানুয়ারি এ রায় থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন করেন মাওলানা সাঈদী। তার ৯০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে খালাস পেতে ১৬টি যুক্তি দেখানো হয়।

আপিলের রায়ে ১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগে সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ। ১০ নম্বর অভিযোগ বিসাবালিকে হত্যা, ১৬ নম্বর অভিযোগ তিন নারীকে অপহরণ করে আটকে রেখে ধর্ষণ এবং ১৯ নম্বর অভিযোগ প্রভাব খাটিয়ে ১০০-১৫০ হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করার।

সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ৬, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়। ৬ নম্বর অভিযোগ লুণ্ঠনের, ১১ নম্বর হামলা ও লুণ্ঠনের এবং ১৪ নম্বর অভিযোগ ধর্ষণের।

৮ নম্বর অভিযোগের অংশবিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে সাঈদীকে খালাস দেওয়া হয়। একই অভিযোগের অংশবিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে তাকে ১২ বছর কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ। অষ্টম অভিযোগটি হত্যা ও অগ্নিসংযোগের।

এ ছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ৭ নম্বর অভিযোগে সাঈদীকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ। এই অভিযোগ নির্যাতন ও বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ।

৮ নম্বর (ইব্রাহিম কুট্টি হত্যা) ও ১০ নম্বর অভিযোগের (বিসাবালি হত্যা) দায়ে সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত