সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ২২:৩৫

নিম্নমাত্রার কেমো ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে রাখে

উচ্চমাত্রার কেমোথেরাপি দিয়ে ক্যান্সার নির্মূলের বদলে নিম্নমাত্রার কেমো রোগটি নিয়ন্ত্রণে বেশি কার্যকর। কম মাত্রায় কেমো প্রয়োগের মাধ্যমে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর শরীরের টিউমার অধিক নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে গত বুধবার গবেষকরা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর এএফপি।

ফ্লোরিডার এইচ লি ক্যান্সার সেন্টার ও রিসার্চ সেন্টার ইন টাম্পার এক দল গবেষক সম্প্রতি স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ইঁদুরের ওপর একটি পরীক্ষা চালান। গবেষণায় দেখা যায়, উচ্চমাত্রার কেমোর বদলে নিম্নমাত্রার কেমো ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে বেশি কার্যকর। ক্যান্সার নির্মূলের জন্য চিকিৎসকরা সাধারণত রোগীদের উচ্চমাত্রার কেমোথেরাপি প্রদান করেন। এসব উচ্চমাত্রার কেমোথেরাপির শরীরের ওপর রয়েছে ক্ষতিকর প্রভাব ও বহুমাত্রিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। আর এ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়িয়ে ক্যান্সার চিকিৎসার বিকল্প পন্থা খুঁজে বের করতেই গবেষকরা ইঁদুরের ওপর এ পরীক্ষা চালান। গত বুধবার এ-সম্পর্কিত গবেষণা প্রতিবেদনটি সায়েন্স ট্রান্সলেশনাল মেডিসিন পত্রিকায় প্রকাশ হয়।

প্রধান গবেষক পেদ্রো এনরিকজ-নাভাস বলেন, আমাদের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, এ ধরনের থেরাপির (নিম্নমাত্রার কেমো) মাধ্যমে স্তন ক্যান্সার দীর্ঘসময় নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

এর আগে বিভিন্ন সময় গবেষকরা কেমোথেরাপির প্রচলিত পদ্ধতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। প্রচলিত পদ্ধতিতে শরীরের ক্যান্সার নির্মূলের জন্য কেমো দেয়া হয়। এতে একপর‍্যায়ে শরীরে কিছু কোষ তৈরি হয়, যার ওপর কোনো ওষুধের কার্যকারিতা নেই। এসব কোষ পরবর্তীতে শরীরে টিউমার কোষ বৃদ্ধিকে ভয়াবহ মাত্রায় ত্বরান্বিত করে।

গবেষণায় স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় প্রচলিত কেমো প্যাক্লিটাক্সেল ব্যবহার করা হয়। আক্রান্ত ইঁদুরকে প্রচলিত মাত্রায় এ ওষুধ প্রদান করা হয়। এতে দেখা যায়, সন্তোষজনক পর‍্যায়ে পৌঁছে ওষুধ বন্ধ করার পর ইঁদুরের শরীরে টিউমারের বৃদ্ধি ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। কিন্তু এর বিপরীতে দেখা গেছে, প্রথমে উচ্চমাত্রায় ওষুধ প্রদানের পর ক্রমান্বয়ে তার মাত্রা কমিয়ে আনলে তা অনেক বেশি কার্যকর হয়। ওষুধের মাত্রার এ অভিযোজনের মাধ্যমে টিউমারগুলো তুলনামূলক কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়া এ ধরনের অ্যাডাপ্টিভ থেরাপির মাধ্যমে শরীরে ক্যান্সার নির্মূল হতে প্রায় একই সময় লাগে।

তবে গবেষকরা এখনই এটি মানুষের ওপর প্রয়োগের সময় আসেনি বলে জানিয়েছেন। তাদের মতে, এটি আমাদের সামনে একটি সম্ভাবনা হাজির করেছে। কিন্তু মানুষের ওপর প্রয়োগের জন্য এক্ষেত্রে বিস্তৃত গবেষণা প্রয়োজন বলে তারা জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত