সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ মে, ২০১৮ ০১:১৯

প্রাপ্তবয়স্কদের ১৮ শতাংশই উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন

দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১৮ শতাংশ উচ্চরক্তচাপে ভুগছে। তাদের মধ্যে অর্ধেকই জানেন না, তারা এ রোগে আক্রান্ত, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আর বাংলাদেশে উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত প্রতি তিনজনের মধ্যে দুজনের রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, যা হৃদরোগ, কিডনিসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের জন্য দায়ী। তারা নিয়মিত ওষুধও সেবন করেন না, যে কারণে এ রোগগুলোয় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়।

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআর,বি) ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক বলেন, উচ্চরক্তচাপ নীরব ঘাতক। উচ্চরক্তচাপের কারণে হঠাৎ হার্ট ফেইলর, স্ট্রোক ও কিডনি ফেইলরের ঘটনা ঘটে। সে কারণে ২০-৫০ বছর বয়সীদের বছরে অন্তত একবার পরীক্ষা করে দেখতে হবে উচ্চরক্তচাপ আছে কিনা। আর উচ্চরক্তচাপ হলে নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে। এজন্য সরকারকে ব্যবস্থা করতে হবে। এটি করতে পারলে বিশাল একটি জনগোষ্ঠী হূদরোগ, স্ট্রোক কিংবা কিডনির রোগ থেকে রক্ষা পাবে।

আইসিডিডিআর,বির অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রধান ড. আলিয়া নাহিদ বলেন, প্রাপ্তবয়স্কদের হূদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং রক্তচাপ হ্রাস করতে কোবরা-বিপিএসে (কন্ট্রোল অব ব্লাড প্রেশার অ্যান্ড রিস্ক অ্যাটেনশন- বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা) একটি সহজ পদ্ধতি পরীক্ষা করা হয়েছে, যা জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সহজেই সংযুক্ত করা সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) অধ্যাপক এ.এইচ.এম. এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. নূর মোহাম্মদ, জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল।

সেমিনারে অসংক্রামক রোগ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে ধারণা দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আব্দুল আলিম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে অসংক্রামক ব্যাধিজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতার হার হ্রাসে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ও রোগের ঝুঁকি শনাক্ত করে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রমাণভিত্তিক পদক্ষেপগুলো শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে নন-কমিউনিক্যাবল ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি) অপারেশনাল প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে দুটি উপজেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে উচ্চরক্তচাপ শনাক্তকরণ এবং রেফারেল সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং উচ্চরক্তচাপের স্ক্রিনিং, রেফারেল এবং চিকিৎসা সম্পর্কিত নির্দেশিকা অনুমোদিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে উচ্চরক্তচাপের বর্তমান পরিস্থিতি উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত