ধারাবাহিক উপন্যাস: বসনা

রেজা ঘটক

 প্রকাশিত: ২০১৫-০৬-২৫ ০৩:০১:১৯

 আপডেট: ২০১৫-০৬-২৫ ০৩:১৫:২৮

প্রচ্ছদ: মোবাশ্বির আলম মজুমদার

বসনা উপন্যাস মূলত ইতিহাস প্রধান। বসনিয়া যুদ্ধ ও জীবন এই উপন্যাসের উপজীব্য বিষয়। লেখার পরতে পরতে ফুটে:

জুটিচা, ১০ এপ্রিল ১৯৯২ 

খোলা আকাশের নিচে এভাবে আর কতোদিন আমরা বেঁচে থাকবো জানি না। এক সপ্তাহ ধরে এই পাহাড়ে আমরা পালিয়ে আছি। জীবন আর মৃত্যুর এখানে পাশাপাশি বসবাস। সার্ব জঙ্গি বিমানগুলো অন্ধকারের উদ্দেশ্যে গোলা ছুড়ে ছুড়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ আকাশে চক্কর দিচ্ছে। কখনো পশ্চিম থেকে পূর্বাকাশে উড়ে যাচ্ছে।

কোনো কোনো সেল এসে পড়ছে জীবন নিয়ে পালিয়ে আশা স্বপ্নের উপর। মুহূর্তে চোখের সামনে নিভে যাচ্ছে তাজা প্রাণ। জীবন, স্বপ্ন, মৃত্যু সবই এখানে একসাথে গাদাগাদি করে আছে। এক একটি সেল এসে জীবন আর স্বপ্ন উড়িয়ে দিয়ে সেখানে বানিয়ে যাচ্ছে বিভিষিকাময় মৃত্যুকূপ। আহা জীবন আর মৃত্যুর দূরত্ব এখানে কতোটুকু, আমরা কেউ জানি না।

আমরা কেউ কি জানি, যুদ্ধ আর শান্তির মধ্যে দূরত্ব-বা কতোটুকু? অথবা আমরা কেউ কি জানি, জীবনের বিরুদ্ধে জীবনের এই যে বিরামহীন লড়াই, তার শেষ কোথায়? আমরা কেউ জানি না, রাতের আকাশের তারায় তারায় আর কতো হাহাকার লেখা আছে? আমরা কেউ জানি না, একটু আগে সার্ব জঙ্গি বিমানের নিক্ষিপ্ত সেলে যেসব বসনিয়ান শিশু মারা গেছে, তাদের কি অপরাধ ছিল? আমরা কেউ নিশ্চিত করে একথাও বলতে পারি না, স্লোবোদান মিলোসেভিচের আর কতো রক্ত চাই? আর কতো শিশু, নারী, পুরুষ আর মায়ের লাশ প্রয়োজন তার?

আমরা একথাও জানি না, এখনো আর কতো রক্ত প্রয়োজন ওই কসোভোর কসাইয়ের? আমরা শুধু জানি, একটা সেল এসে যে কোনো সময় আমাদেরও উড়িয়ে নিতে পারে। বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে আমাদের এই প্রিয় শরীর আর মাথা। চির জীবনের মতো বন্ধ করে দিতে পারে ধুক-ধুক করে চলা আমাদের এই ছোট্ট হৃদকম্পন। অথবা গুড়িয়ে ছাতু করে দিতে পারে আমাদের এই ছোট্ট শরীর। তখন পৃথিবীতে আর এই শরীরের কোনো চিহ্নই থাকবে না। কিংবা কেবল যমের সাথে দেখা হবার পূর্ব পর্যন্ত ছোট্ট শরীরের এই অবুঝ মনে, এই নিরবিচ্ছিন্ন দুঃশ্চিন্তা চলবে।

ব্রাটুনাচ শহর থেকে পাহাড়ি এই গ্রামটা মাত্র দুই কিলোমিটার। শান্ত সুন্দর নৈসর্গিক এই গ্রামটির নাম জুটিচা। জুটিচা আর পাহাড় যেনো মিলেমিশে এক অপূর্ব নৈসর্গিক ভূবন। গতরাতেও এই সুন্দর গ্রামটার কথা আমরা জানতাম না। আমরা একেক রাত, একেক জঙ্গলে থাকছি। কখনো নতুন কোনো গ্রামে যাচ্ছি।

ছোটখালা খবর নিয়েছিল, ব্রাটুনাচের সবাই দলে দলে জীবন নিয়ে এই ছোট্ট গ্রাম জুটিচায় পালাচ্ছে। তারপর আর দেরি না করে রাতের অন্ধকারেই ছোটখালা, ছোটখালার চার বছরের ছেলে আহমেদ আর আমি জুটিচার উদ্দেশ্যে রওনা দেই।

রাতের অন্ধকারে আমরা যখন ব্রাটুনাচ থেকে পালিয়ে হেঁটে হেঁটে জুটিচার দিকে যাচ্ছিলাম, তখন সার্ব জঙ্গি বিমানগুলো সাঁই সাঁই করে উত্তর থেকে দক্ষিণে তুজলার দিকে যাচ্ছিল। কখনো কখনো সার্ব জঙ্গি বিমানগুলো আরেকটু পশ্চিমের দিকে আমাদের জোয়ার্নিকের দিকেও যাচ্ছিল। জোয়ার্নিকে আমার পরিবারের সবাই থাকে। নানা সোলেমান, নানী হাইরিয়া, মা রাফিয়া আর আমার চেয়ে তিন বছরের বড় একমাত্র ভাই ডেভিড। আমরা কেউ জানি না, নানা-নানী, মা আর ডেভিড এখনো বেঁচে আছে কিনা? বেঁচে থাকলে তারা কোথায় আছে? কীভাবে বেঁচে আছে ওরা? কোথায় কাদের সঙ্গে আছে ওরা, তাও আমরা কেউ জানি না।

আমার অবচেতন মন বলছে, নানা-নানী, মা আর ডেভিড যদি বেঁচে থাকে, তাহলে ওরা শহরে না থেকে হয়তো কুলা’র দিকে পালাবে। ছোটখালা শুনেছিল, বিবিসি আর আল-জাজিরা খবর দিচ্ছিল যে, জোয়ার্নিক আর তুজলায় যেসব বসনিয়ান মুসলিমরা রয়েছে, তারা সার্ব জঙ্গি বিমানের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য গত কয়েকদিন ধরে কুলা’র দিকে পাহাড়ি জঙ্গলে আশ্রয় নিচ্ছে। আর গত তিন দিন ধরে সার্ব জঙ্গি বিমানগুলো পাহাড়ি জঙ্গলেও অজানা নিশানায় বোমা হামলা করেছে। নানা-নানী, মা আর ডেভিড কি সত্যিই কুলা’র জঙ্গলে পালিয়েছে? ডেভিড কি ওদের সঙ্গে আছে? নাকি ডেভিডকে সার্ব মিলিটারি ধরে নিয়ে গেছে?

এমনিতে সার্ব মিলিটারি বসনিয়ান ইয়াং ছেলেদের খুঁজে পেলেই সঙ্গে সঙ্গেই গুলি করে মারছে। বসনিয়ান ইয়াং মেয়েদের ধর্ষণ করছে। ধর্ষণ শেষে গুলি করে মারছে। অথবা নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে ধোয়া মোছা রান্নাবান্নার কাজ করাচ্ছে আর যখন খুশি ইচ্ছেমত গণ-ধর্ষণ করছে।

জোয়ার্নিক থেকে ব্রাটুনাচ আসার আগেও আমরা কেউ জানতাম না, মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে কি হতে যাচ্ছে। এমনিতে ছোটখালারা প্রায় সময়ই জোয়ার্নিকে থাকে। জোয়ার্নিকে ছোটখালাদের বাসা আমাদের বাসা থেকে মাত্র আধঘণ্টা পায়ে হাঁটা পথ। এছাড়া ব্রাটুনাচেও ছোটখালু’র আরেকটা বাড়ি আছে। হিল টপে খুব সুন্দর বাড়ি। পেছনে দ্রিনা নদী। ছোটখালু হাকিয়া পেশায় একজন আর্কিটেক্ট। ব্রাটুনাচের হিলটপের বাড়িটা খুব সুন্দর করে নিজেই ডিজাইন করেছেন ছোটখালু।

এমনিতে আমাদের স্কুল বন্ধ থাকলে ব্রাটুনাচে ছোটখালার সঙ্গে আমরা মাঝে মাঝে বেড়াতে যাই। রাজধানী সারায়েভোতে ৫ এপ্রিল ৬ জন মারা যাবার পর থেকেই আমাদের স্কুল বন্ধ। স্কুল আবার কখন খুলবে কেউ বলতে পারে না। সবাই মনে করেছে সারায়েভো’র বিক্ষোভ একটু শীতল হলেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু সার্ব মিলিটারি যে এভাবে আমাদের বসনিয়ান মুসলিমদের উপর আক্রমণ করবে, এটা কেউ ধারণাই করেনি। যুদ্ধ শুরু হবে বুঝতে পারলে ছোটখালাও হয়তো জোয়ার্নিক ছাড়তেন না। আমাদের সঙ্গে একত্রে থাকতেন।

কিন্তু দুই সপ্তাহ আগে ছোটখালু যখন কাজের উদ্দেশ্যে ব্রাটুনাচ আসেন, তখন আমরাও তার সঙ্গে ব্রাটুনাচে আসি। রাজধানী সারায়েভোতে তখন ৬ জনের নিহত হবার প্রতিবাদে রাজনৈতিক মিছিল সমাবেশ এগুলো হচ্ছিল। কিন্তু এটা যে যুদ্ধ পর্যন্ত গড়াবে তা কেউ কল্পনাও করেনি। ছোটখালু এসব আগে বুঝতে পারলে আমাদেরও সঙ্গে আনতেন না। সারায়েভোতে কোনো গণ্ডগোল হলে তার রেশ ব্রাটুনাচের মত ছোট শহরে ছড়িয়ে পরতে পারে, তা কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। কিন্তু এটা সার্বদের পরিকল্পিত যুদ্ধের অংশ। তাই তারা দ্রিনা নদী পার হয়ে এপারে আক্রমণ করেছে।

এমনিতে রাজধানী সারায়েভো’র গ্যারিসনে সার্ব মিলিটারিরা এখনো সংখ্যাগরিষ্ঠ। সমাজতান্ত্রিক যুগোশ্লাভিয়া ফেডারেশানেও সার্ব মিলিটারি সবচেয়ে বেশি ছিল। সমাজতান্ত্রিক যুগোশ্লাভ ফেডারেশানের যুগোশ্লাভ পিপল’স আর্মি বা জেএনএ, টেরিটরিয়াল ডিফেন্স বা টিও, সিভিল ডিফেন্স বা সিজেড আর মিলিশিয়া বা পুলিশ মিলেই হল টোটাল ডিফেন্স। যার মধ্যে যুগোশ্লাভ পিপল’স আর্মি বা জেএনএ-কে বলা হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গোটা ইউরোপের তৃতীয় শক্তিধর মিলিটারি। আর টেরিটরিয়াল ডিফেন্স বা টিও সংখ্যা প্রায় আট লাখ ষাট হাজার। যারা সবাই মিলিটারি ট্রেনিংপ্রাপ্ত।

গোটা সমাজতান্ত্রিক যুগোশ্লাভিয়া ফেডারেশানে প্রায় দশ থেকে ত্রিশ লাখ টেরিটরিয়াল ডিফেন্স বা টিও আছে। ১৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সি নারী পুরুষ সবার জন্যই এই মিলিটারি ট্রেনিং ছিল বাধ্যতামূলক। যুদ্ধকালীন সময়ে সবাই যাতে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারে, সেজন্য যুগোশ্লাভিয়ায় এটা চালু করেছিলেন ফিল্ড মার্শাল টিটো।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যেসব মিলিটারির বীরত্বপূর্ণ গল্প আছে, আমরা পাঠ্য বই থেকে সেসব গল্প পড়েছি। কিন্তু সেই মিলিটারি যে এভাবে আমাদের উপর গোলাবর্ষণ করবে, কে জানতো? মিলিটারি শব্দটি শুনলেই এখন ভয় লাগে। আগে পাঠ্যবইয়ের গল্পগুলো আমাদের সাহস যোগাতো। কিন্তু এখন সার্ব জঙ্গি বিমানগুলোর শব্দ শুনলেই জীবন হাতে নিয়ে আমরা এই পাহাড়ি জঙ্গলে দৌড়ে বেড়াই।

এই যে এখন এই অচেনা জুটিচা গ্রামে আমরা খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছি। আর কোনোদিন নানা-নানী, মা আর ডেভিডের সঙ্গে দেখা হবে কিনা কেউ জানি না। আমরা কেউ প্রাণে বাঁচব কিনা তাও জানি না। ছোটখালু আমাদের জুটিচায় রেখে ব্রাটুনাচ গেছেন। ছোটখালু বেঁচে আছেন কিনা তাও আমরা জানি না।

ছোটখালার বিয়ে হয়েছিল তেঁইশ বছর বয়সে; সাত বছর আগে। তাঁর বয়স এখন ত্রিশ। মা’র চেয়ে তিনি ছয় বছরের ছোট। ছোটখালার একমাত্র সন্তান আহমেদের বয়স এখন চার। আহমেদ, ডেভিডের চেয়ে পনেরো আর আমার চেয়ে বারো বছরের ছোট।

ব্রাটুনাচ থেকে আমরা ছোটখালার সঙ্গে জুটিচায় পালিয়ে আসার সময়, অন্য পালানো দলগুলোর সঙ্গে যোগ দেওয়া পর্যন্ত অনেকটা পথ ছোটখালু আমাদের সঙ্গে ছিলেন। আমরা জুটিচার অতি নিকটে এই পাহাড়ি জঙ্গলে পৌঁছার পর ছোটখালু আবার ব্রাটুনাচ ফিরে গেছেন। ছোটখালাকে শিখিয়ে দিয়েছেন, রাতে যেনো আমরা জুটিচার এই পাহাড়ি জঙ্গলেই পালিয়ে থাকি। আর দিনে জুটিচা গ্রামে গিয়ে খাবারের সন্ধান করি।

সার্ব জঙ্গি বিমানগুলো সাধারণত রাতে আক্রমণ করে। তাই রাতের বেলায় ব্রাটুনাচ শহর বা জুটিচা গ্রামের চেয়ে জুটিচার এই পাহাড়ি জঙ্গলকে অনেকটা নিরাপদ মনে করছে সবাই। খোলা আকাশের নিচে সার্ব জঙ্গি বিমানগুলোর হামলা সত্বেও এই পাহাড়ি-জঙ্গলে আমরা কতোখানি নিরাপদ তা অবশ্য কেবল সৃষ্টিকর্তাই জানেন। তবু এটুকু ভরসা যে ছোটখালা, আহমেদ আর আমি এখনো এখানে প্রাণে বেঁচে আছি। এখনো জানি না ডেভিডকে ওরা ধরে নিয়ে গেছে কিনা? জানি না মা, ডেভিড, নানা-নানী বেঁচে আছে কিনা? বেঁচে থাকলে ওরা কোথায়, কিভাবে আছে, কিচ্ছু জানি না।

এই যুদ্ধ কবে, কিভাবে শেষ হবে, তাও আমরা জানি না। জানি না, মিলোসেভিচের শেষ ইচ্ছে আসলে কি? জুটিচার এই পাহাড়ি জঙ্গলে বুনো সার্ব জঙ্গি বিমানগুলোর বিভৎস তর্জন-গর্জন কতোক্ষণ আমাদের বাঁচিয়ে রাখবে, কিচ্ছু জানি না। তবু খোলা আকাশের মিটিমিটি তারার মতো আমরাও নিভুনিভু প্রাণ নিয়ে এখনো বেঁচে আছি।

দ্বিতীয় সপ্তাহে আমরা পাহাড়ি পথে ঘুরতে ঘুরতে যে গ্রামে পৌঁছেছি এটা আরো সুন্দর। পাহাড়ি জঙ্গলে ঘেরা। ঘনঘন গাছপালা। আগের চেয়ে একটু নিরাপদ হয়তো। কিন্তু এই গ্রামের বা এই জঙ্গলের নাম আমরা কেউ জানি না। অন্যান্য পালিয়ে আসা রিফিউজিদের সঙ্গে আমরাও এই জঙ্গলে আছি। কিন্তু এখানের পাহাড় খুব সুন্দর। ছোট ছোট পাহাড়। কিন্তু চারপাশ দেখতে ভারী সুন্দর; কেবল সবুজ আর সবুজ।

তবুও এই সবুজের কোথাও কোথাও কালো ধোয়া উড়ছে। সার্ব জঙ্গি বিমানগুলো গতরাতেও যেখানে যেখানে বোমা হামলা করেছে, সেখান থেকে কালো ধোয়া উড়ছে। গডকে ধন্যবাদ যে এখনো আমরা বেঁচে আছি। কিন্তু এভাবে পাহাড়ি জঙ্গলে কতোক্ষণ পালিয়ে বাঁচা যাবে, আমরা তার কিছুই জানি না। তবু ছোটখালা, আহমেদ আর আমি বাঁচার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের ভাগ্যে কি লেখা আছে, আমরা কেউ জানি না। ছোটখালু কি ব্রাটুনাচ আছে নাকি অন্য কোথাও পালিয়েছে, তাও জানি না।

গত তিন দিন একটানা ব্রাটুনাচে খুব বোমা হামলা করেছে সার্ব জঙ্গি বিমানগুলো। ছোটখালু কি এখনো বেঁচে আছে? কোথায় আছে ছোটখালু? নানা-নানী, মা আর ডেভিড কি এখনো জোয়ার্নিকে আছে? নাকি কুলা’র দিকে পাহাড়ি জঙ্গল পথে পালিয়েছে? কোথায় আছে ওরা? ওরা সবাই কি এখনো বেঁচে আছে? শুধু এটুকু জানি, ছোটখালা, আহমেদ আর আমি এখনো বেঁচে আছি।

একটা নাম না জানা পাহাড়ি জঙ্গলে আমরা আছি। এখানে খাবার নেই। পানি নেই। আলো নেই। কিন্তু আমাদের মত কিছু বসনিয়াক রিফিউজি আছে। কেউ কাউকে চেনে না। কিন্তু জীবন বাঁচাতে সবাই একসঙ্গে পালিয়ে থাকছি। আমাদের সঙ্গে আছে প্রতি মুহূর্তের অসংখ্য উৎকণ্ঠা। আর আছে জীবন নিয়ে পালানো একদল মানুষের প্রাণান্ত বেঁচে থাকার চেষ্টা। সেই প্রচেষ্টায় এখনো আমরা বেঁচে আছি।

সার্ব জঙ্গি বিমানের ছোড়া সেল বা বোমায় সেই জীবন, যে কোন সময় নিভে যেতে পারে। তবুও আমরা বাঁচার নেশায় পালিয়ে আছি। আহমেদ, ছোটখালা আর আমি এখনো বাঁচার চেষ্টা করছি। জীবন বাজি রেখে জীবন বাঁচাতে চেষ্টা করছি।

চলবে...

আপনার মন্তব্য