দুর্জয় আশরাফুল ইসলাম’র পাঁচটি কবিতা

 প্রকাশিত: ২০১৫-০৮-০৪ ১৬:৩০:২২

কেন আমিই বা সূর্যের মুখ দেখে, ঝড়ের দিনে বিপর্যস্ত হাওয়া দেখে, বিগত রাত্রির মতো প্রিয়তম চাঁদ দেখে, ম:

মাছ ও মানুষ
'মাছ কি মানুষ নয়? : সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়'

এরূপ প্রশ্নে বারংবার কেপে ওঠে হৃদয়
পৃথিবী পৃষ্ঠে উচ্ছিষ্ট আমি -
তবুও পাথর নই,
মানুষের মিছিলে যদিও চলেছি আমি -
ছুইনি তবুও মানবিক প্রণয়।

না মানুষ আমি -
না শান্ত গভীর চলাচলকারী মৎসটি হই
শুধু মানুষের মুখাবয়ব।

 

রুদ্ধদ্বার
রুদ্ধদ্বার নদীটি কীভাবে বেঁচে আছে আজো
যখন সমস্ত গেছে তাকে পর করে,
যখন দূর হাওয়ারা এসে মিলিয়ে যায় শূন্যে
শরীরে তার মাখতে পারে না প্রীত-ঢেউ,
কীভাবে বেঁচে আছে?
- গভীরতম দুঃখ ধারক দুটো চোখ তারও আছে
সংগোপনে বুক ফেটে কান্না আসে, একঘরা নদী
এমনি বাঁচে।

সাদৃশ্যের গল্প করে কী আর হবে,
স্তব্ধতা ঘূর্ণি করে বারংবার ফিরে ফিরে,
অনিদ্রার মতো স্মৃতি জাগরূক অসুখ নিয়ে
পৃথিবীতে কতো মানুষ আজও দিন যাপন করে।

তারচেয়ে শিখি চিরকালীন নির্ণেয়-
অবিরত আকাশের চোখে সেসব, না দেখা উপাদেয়।

 

তোমাকে ভাবনা
যেন উন্মাতাল কোন শব্দে ঘুম ভেঙে গেল,
আর সারারাত প্রেমাষ্পদ আলো ছড়ানো চাঁদ
সূর্যের মুখ দিয়ে নবরূপে দিচ্ছে উঁকি;
সহজিয়া, পূণরাবৃত্তের এসব নৈমত্তিক খেল -
কেন তুমি আর পৃথিবীর পথে ফেরাও না পা?

কেন আমিই বা সূর্যের মুখ দেখে,
ঝড়ের দিনে বিপর্যস্ত হাওয়া দেখে,
বিগত রাত্রির মতো প্রিয়তম চাঁদ দেখে,
মেঘেদের চুলের মত অন্ধকার সব রাত দেখে,
তোমাকে পূণর্বার দেখব বলে যাপন অবশিষ্ট রাখি?

এই শব্দ পড়ার খেল যেন এক পৃথিবীর কাজ,
তোমার অবিরাম নিদ্রা ঘরে যেন ফোঁটায় না বাজ!
কিংবা নিদ্রা -
প্রত্যক্ষ অবজ্ঞার বিপরীতে কল্পিত ভাবনা বলয় ;
তোমাকে ভেবে কাটছে বারংবার সুর তাল লয়!

 

দুজনই এমন
খুব করে চাইছো আপেক্ষিক বিত্তের গল্প ছড়াতে
আমায় ছাড়িয়ে কেমন চলে গেছো সুখ সুদূরে-
আমি কি দেখি না বজ্রপাত অন্য আকাশেও পড়ে
আমার মতই কন্ঠস্বরে কান্না লুকাও মিথ্যা'র পরে।

দেখি নি কি আমি এক রঙা রক্তপাত তোমার উঠোনে
চলছে ছুঁড়ি কাটছে গলা ভিন্ন ভিন্ন প্রহরে;
যেমন করে আমার শরীর বিক্ষত হয়ে ছড়িয়ে যায়
তোমার ত্রাতাও চাইছে এমন প্রচ্ছদ থাকা চাই।

করো আত্মব্যবচ্ছেদ, দেখো নিজস্ব মুখ -
একই রকম হাটছো তুমি, তোমারও বড্ড অসুখ
ভাবলে পাবে, একই বেদনা যাচ্ছে, টানছে প্রবল -
ধ্বংসের পথে একই স্রোতে, দুজনই আছি দূর্বল।

 

কৌতুহল
এতোসব পাখির পালক মিলিত হয়ে একটি পাখি
আর বনাঞ্চল যেন ভ'রে গেছে সুগন্ধি ফুলে
এই দীর্ঘ সরু পথে কেবল তোমাকেই ধরে -
শেষটা যার গেছে পৃথিবীর স্বর্গপুরে।

একটা ছায়ামেঘ অবিরাম উড়ছে মাথার উপর -
যেন একটি খুব গোপন চিঠি'র উন্মেষ সন্নিকটে,
দ্যাখো আমার হৃৎপিণ্ড কেমন কাঁপছে ভয়ে
গুড়ো গুড়ো অনুভব তুমি কেমন দেখতে পেলে!

একা পাহাড় হয়ে অবিচল দাঁড়িয়ে থাকবো বলে
কত মৌন প্রতিজ্ঞা হয়েছে নিজের সাথে,
গুঞ্জরিত সুরকে পিঞ্জরে সঞ্চিত রেখে সম্ভাবনার
এপিঠ ওপিঠ ভেবে দেখছি কৈশোর কৌতুহলে।

আপনার মন্তব্য