সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ১৬:৩৩

পুলিশ ঘরে ঘরে পাহারা দিয়ে পারবে না: আইজিপি

পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, পুলিশ ঘরে ঘরে পাহারা দিয়ে পারবে না, নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেরাই নিতে হবে।

একের পর এক হত্যাকাণ্ড ও খুনি ধরতে ব্যর্থতার সমালোচনার মধ্যে পুলিশ প্রধান মঙ্গলবার এ মন্তব্য করেন।

রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাসে নিজের বাসায় সোমবার বিকালে খুন হন ইউএসএআইডির কর্মকর্তা সমকামী অধিকার কর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয়।

মঙ্গলবার সকালে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন।

দুদিন আগে সন্ত্রাসীর কোপে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক নিহতের পর এই জোড়া খুন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

তবে এসব ঘটনায় পুলিশের ব্যর্থতা মানতে নারাজ পুলিশ প্রধান নিরাপত্তার বিষয়ে নাগরিকদের সতর্ক হওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন।

তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিটি ব্যক্তির সেন্স অব সিকিউরিটি থাকতে হবে। তার নিজের নিরাপত্তা, প্রতিবেশীর নিরাপত্তা, এলাকার নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন হতে হবে।”

আইজিপি বলেন, “পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘরে ঘরে পাহারা দিয়ে পারবে না। নাগরিকদের নিজস্ব নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে হবে।

“এক্ষেত্রে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের সুসম্পর্ক থাকবে, সহযোগিতা থাকবে। কিন্তু তাদের এগিয়ে আসতে হবে।”

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জুলহাজ ও তনয়কে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছেন শহীদুল হক।

তিনি বলেন, “অত্যন্ত সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ধারণা করছি, রেকি করে খুনিরা খুনের পরিকল্পনা করেছে। জায়গাটা যথেষ্ট সিকিউরড। খুনিরা পালিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশ থেকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হলে তাদের ধরা যেত।”

পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হলে তা ঠেকাতে না পারায় গোয়েন্দাদের কাজের ঘাটতি ধরা পড়েছে কি না-এ প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, “গোয়েন্দারা ‘মাইক্রো’ লেবেলের কাজ ডিল করে না। একটা ব্যক্তিকে কখন কীভাবে হত্যা করা হবে সেটা ধরা গোয়েন্দাদের কাজ নয়। একটা সামগ্রিক বিষয়ে তারা তথ্য সংগ্রহ করে; মনে করেন, জঙ্গিদের তৎপরতার বিষয়ে তারা তথ্য সংগ্রহ করে।

“জঙ্গিরা কোথায় গিয়ে কী করবে সেটা সূত্র না পেলে জানার প্রযুক্তি তো আমাদের হাতে নাই। তাই এটাকে ইন্টেলিজেন্টের ব্যর্থতা বলব না। তাদের সফলতা আছে বলেই আমরা অনেক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছি।”

এই হত্যাকাণ্ডেও অতীতের ‘জঙ্গি হামলার’ মিল রয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশ প্রধান।

তবে এখনই হত্যার ‘মোটিভ’ সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি তিনি।

“কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারলে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ জানা যাবে। জঙ্গিদের কাজ কি না সেটি তদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”

খুনিদের ধরার বিষয়ে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমাদের দক্ষ ইনভেস্টিগেটর আছে। অতীতে জঙ্গিরা যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে সেসব ঘটনায় অপরাধীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। এই ঘটনায়ও অপরাধীদের চিহ্নত করা সম্ভব হবে। পুলিশের দায়িত্ব অপরাধী ধরে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। সেটি আন্তরিকতার সঙ্গে আমরা করব।”

শনিবার রাজশাহীতে খুন হওয়া অধ্যাপক এএফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ আছে বললেও কী সেই অগ্রগতি তা বলেননি আইজিপি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত