সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ এপ্রিল, ২০১৬ ১৪:৪২

সব হত্যার তদন্তে অগ্রগতির দাবি ডিএমপি কমিশনারের

ব্লগার, লেখক ও প্রকাশক হত্যার প্রতিটি ঘটনার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

ডিএমপি কমিশনের এ দাবির সঙ্গে এও বলেছেন, অভিজিৎ রায় ও ফয়সল আরেফিন দীপনের হত্যাকারীদের অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছে।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) ইসলামী ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশকে তিনটি পিকআপ ভ্যান দেওয়া উপলক্ষে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে  আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব দাবি করেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যার পর ধারাবাহিকভাবে প্রায় একই কায়দায় চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটছে। এসব হত্যাকাণ্ডে কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও কোনোটিরই রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।

সর্বশেষ সোমবার কলাবাগানে সমকামী অধিকার কর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যাসহ সাতটি হত্যাকাণ্ডে আনসারুল্লাহ বা আনসার আল ইসলামের  দায় স্বীকারের বার্তা এসেছে।  আনসার আল ইসলাম নিজেদের জঙ্গি গোষ্ঠী

অভিজিতের পর একে একে খুন হয়েছেন অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু, ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ, নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নীলয়, অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজিম উদ্দিন।

এর আগে যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবিতে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে গণজাগরণ আন্দোলন শুরুর কয়েক দিনের মাথায় খুন হয়েছিলেন ব্লগার রাজীব হায়দার।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ব্লগার, প্রকাশক হত্যায় সারা দেশে এ পর্যন্ত ২১টি মামলা হয়েছে। তার মধ্যে ১৬টা মামলার ‘ডিটেকশন’ হয়েছে।

“ঢাকা মহানগরে মোট ১১টা মামলা হয়েছে। ওই ঘটনাগুলো জঙ্গি গ্রুপ করেছে বলে ধারণা। এই মামলাগুলোর পাঁচটির চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যা মামলার রায় হয়েছে। সেখানে আট জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

“অন্যান্য মামলাগুলোর চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, কতগুলো মামলার এখনো তদন্ত চলছে। তার একটি হলো অভিজিৎ হত্যা মামলা, একটি দীপন হত্যা মামলা যেটি শাহবাগে হয়েছিল; আরেকটি শুদ্ধস্বরে হত্যাচেষ্টা মামলা যেটি মোহাম্মদপুরে হয়েছিল; আরেকটি হলো নিলয় হত্যা মামলা- এগুলো তদন্তাধীন রয়েছে।”

সবগুলো হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অগ্রগতির দাবি করে তিনি বলেন, “অভিজিৎ ও দীপন হত্যায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আছে। কারা খুন করেছে সেই নাম ঠিকানাও পেয়েছি। কেউ গ্রেপ্তার হয়েছে, কিন্তু অনেককে গ্রেপ্তার করতে পারিনি। এরইমধ্যে অনেকে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছে। এই বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।”

ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রধান তদন্ত ঘিরে বিভিন্ন সমালোচনার জবাবে বলেন, “একটি মামলায় চার্জশিট দিতে হলে শুধু সাক্ষী পেলেই হবে না, সেই সাক্ষীর সমর্থনে সাক্ষী অর্থাৎ আলামতের দরকার হবে। বিজ্ঞ আদালতে একজনের অপরাধ প্রমাণ করতে হলে তার একটা ‘কনক্লুসিভ প্রুফ’ বের করতে হবে। শুধু শোনা কথায়, বোঝা কথায়, অনুমান নির্ভর কথায় কাউকে সাজা দেওয়া যায় না,” ব্যাখ্যা তার।

‘শিগগিরই’ তদন্ত শেষ করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “সেই যোগ, বিয়োগ ও বিভিন্ন তথ্যের কলাবরেশন সমর্থন দিয়ে অচিরেই চার্জশিট দিয়ে দেব।”

কলাবাগানে জুলহাজ-তনয় হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের ভূমিকা তুলে ধরে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, “কলাবাগানে যে হত্যা হয়েছে সেখানে সাত মিনিটে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। একজন এএসআইকে চাপাতি দিয়ে কোপায়। সন্ত্রাসীদের ব্যাগ জব্দ করেছি।”

গোয়েন্দারাসহ পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে জানিয়ে খুনিদের গ্রেপ্তারের আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত