সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ জুন, ২০১৬ ১৩:২০

বাবুল আক্তার : জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এক সাহসী কর্মকর্তা

সাহসিকতার সঙ্গে পুলিশের দায়িত্ব পালন করে এসেছেন বাবুল আক্তার। সততা, নিষ্ঠা আন্তরিকতা ও সাহসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষের কাছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাবুল আক্তারের ভূমিকা তাকে সবার সামনে তুলে ধরেছে একজন আদর্শ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে।

২০০৯ সালের নগরীর টাইগার পাস এলাকায় এক সন্ত্রাসী ধরতে গিয়ে অস্ত্রের মুখোমুখি হওয়ার পর প্রাণের ভয় না করে আসামীকে আটক করতে সফল হয়েছিলেন সেই সময়ের তরুণ সহকারী পুলিশ কমিশনার বাবুল আক্তার। এ কারণে তিনি পেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক বা পিপিএম (সাহসিকতা) ২০০৯।

২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুর বৌদ্ধমন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সরকারী তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলেন বাবুল। তদন্ত অনুসারে হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে আরাকানি নেতা আবু ছালেহকে গ্রেফতারে ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।

২০১৫ সালে ৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার খোয়াজনগর এলাকার একটি ভবনে জেএমবি আস্তানায় অভিযান চালাতে গিয়ে তিনি গ্রেনেড হামলা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান। এরপরও সেখান থেকে আটক করেন জেএমবি চট্টগ্রামের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ জাবেদকে। আস্তানা থেকে শক্তিশালী নয়টি হ্যান্ড গ্রেনেড, প্রায় ২শ’ রাউন্ড একে ২২ এর গুলি, একটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ছোরা, বিপুল পরিমান বোমা তৈরির সরঞ্জাম, অস্ত্র তৈরির মেশিন ও জিহাদী বই উদ্ধার হয়।

জাবেদ ৬ অক্টোবর ভোরে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে আরেকটি অভিযানে গিয়ে গ্রেনেড বিস্ফোরণে নিহত হয়। এর আগে নগরীতে থেকে অভিযান চালিয়ে বাবুল আটক করেন আরও চার জঙ্গিকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে দু’টি চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডেরও রহস্য উদঘাটন হয়। এর একটি হলো ২০১৫ সালে বায়েজিদে শেরশাহ ন্যাংটা ফকিরের মাজারে ঢুকে কথিত পীরসহ দু’জনকে গলা কেটে হত্যা। আর অন্যটি হলো কোরবানির আগের দিন সদরঘাট বাংলাবাজার এলাকায় ছিনতাইয়ের সময় গ্রেনেড বিস্ফোরণের দুই ছিনতাইকারি নিহত ও এক ব্যবসায়ী হত্যা।

জঙ্গিবাদ ও অপরাধ দমনে সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে বাবুল আক্তার পেয়েছেন রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক পিপিএম (সেবা) (২০০৮), ২০০৯ পিপিএম (সাহসিকতা), ২০১০ সালে আইজিপি ব্যাজ, ২০১১ সালে পুলিশের সর্বোচ্চ মর্যাদাশীল পুরস্কার বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (সাহসিকতা)। বেসরকারি পর্যায়ে ২০১২ সালে সিঙ্গার-চ্যানেল আই (সাহসিকতা) পুরস্কার লাভ করেছেন বাবুল আক্তার। এর মধ্যে চারবার অর্জন করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের সেরা সহকারী পুলিশ সুপারের মর্যাদা।

গত এপ্রিলে পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতিও পেয়েছেন এসপি বাবুল আক্তার।

সেই বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম শিশুপুত্রকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় সেই পুত্রের সামনেই নৃশংসভাবে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিহত করার পেছনে জোরালো ভূমিকা রাখার কারণেই বাবুলের স্ত্রীকে এই নির্ম পরিণতির শিকার হতে হলো বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত