সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ জুলাই, ২০১৬ ০৯:০৮

জিম্মি উদ্ধার অভিযান : ৫ জন নিহত, ১২ জন উদ্ধার

গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জিম্মি উদ্ধারে অভিযান শেষ পর্যায়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, অভিযান শুরুর ৪৫ মিনিটের মধ্যে পুরো পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে।

র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থলে বলেন, ভেতরে পাঁচজন মারা গেছে। ১২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ও উদ্ধার করা ব্যক্তিদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকা সাংবাদিকেরা জানান, উদ্ধার অভিযানের একপর্যায়ে ওই রেস্তোরাঁয় সাতটি অ্যাম্বুলেন্স নেওয়া হয়। সেগুলোতে অনেককে সরিয়ে আনা হয়।

এদিকে অভিযান শুরুর আগে আইএসের (ইসলামিক স্টেট) কথিত বার্তা সংস্থা আমাক নিউজ ওই রেস্তোরাঁর ভেতরে তাদের হাতে নিহত কয়েকজনের রক্তাক্ত ছবি প্রকাশ করে। আমাক নিউজের সেসব ছবি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ টুইটারে প্রকাশ করে অভিযান শুরুর প্রায় আধা ঘণ্টা আগে।

এর আগে আজ সকাল সাড়ে ৭টার পরপর পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, সোয়াত ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে অভিযান শুরু হয়। অভিযান শুরুর পর মুহুর্মুহু গুলির শব্দ শোনা যায়।

ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা প্রথম আলোর প্রতিবেদকেরা জানান, সাড়ে ৭টার পরপর সোয়াতের একটি দল একটি অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে ওই রেস্তোরাঁ দিকে এগোতে থাকে। এর পর পর কয়েক দিক থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সমন্বিত অভিযান শুরু করে।

এর আগে শুক্রবার মধ্য রাত থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুতিতে নিতে শুরু করেন। ভোর পাঁচটার দিকেই তাদের প্রস্তুতি শেষ হয়। পরে আশপাশে অবস্থান নেওয়া সংবাদকর্মীদের পুলিশ নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেয়। শনিবার সকাল ৬টার দিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি সেখানে উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। সকাল সাতটায় সাতটি সাঁজোয়া যাসহ সেনাবাহিনীর একটি দল ওই এলাকায় অবস্থান নেয়।

এর আগে শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে গুলশানের ৭৯ নম্বরের আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ৮ থেকে ১০ জন যুবক অতর্কিত হামলা চালায়। এরপর তারা ওই রেস্তোরাঁয় থাকা লোকজনকে জিম্মি করে। জিম্মিদের মধ্যে অন্তত ২০ জন বিদেশি নাগরিকসহ ৩০-৩৫ জন আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর থেকে পুরো চার কিলোমিটার এলাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রাখে।

আর্টিজান বেকারি নামের ওই রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার কিছুক্ষণ পর পুলিশের অগ্রগামী দলের দুই কর্মকর্তা জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় নিহত হন। আহত হন অন্তত ৪০ জন পুলিশ সদস্য। নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন।
গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতাল সূত্র জানায়, ওই হাসপাতালে মোট ৩৬ জন আহত ব্যক্তিকে নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে দুজন মারা গেছেন। এখন ভর্তি আছেন ২৪ জন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জঙ্গি হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

সূত্র: প্রথম আলো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত