০৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:৪৫
গুলশানে জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনে গিয়ে ধাওয়ার শিকার হয়েছেন বিএনপি-ঘনিষ্ঠ পেশাজীবী নেতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
রোববার সন্ধ্যায় এই কর্মসূচি শুরু হতেই শহীদ মিনারে উপস্থিত হন জাফরুল্লাহ, তার সঙ্গে ছিলেন মানবাধিকারকর্মী শিরিন হক।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হকের বক্তব্য শুরু হতেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক শাহীন তেড়ে যান জাফরুল্লাহ ও শিরিনের দিকে। তাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেন তিনি।
কিন্তু মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের কর্মসূচি শুরুর আগে জাফরুল্লাহ শহীদ মিনার ছেড়ে যাবেন না বলে জানালে তখন শাহীনের সঙ্গে যোগ দেন অন্য সংস্কৃতিকর্মীরা।
শহীদ বেদী থেকে নেমে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক শাহাদাৎ হোসেন নিপু জাফরুল্লাহকে বলেন, “আপনি জঙ্গিবাদের আশ্রয়দাতা ও মদদদাতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আপনার মতো মানুষ এই শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের সমাবেশে আসতে পারেন না।”
বলেই জাফরুল্লাহ ও শিরিনের হাত থেকে মোমবাতি কেড়ে নেন নিপু।
কর্মসূচি শেষ হলে সংস্কৃতিকর্মীরা ঘিরে ধরেন জাফরউল্লাহ ও শিরিন হককে।
তখন জাফরুল্লাহ বলেন, “আমি তো সমাবেশে এসে কোনো অন্যায় করিনি। আর সবার মতো আমিও নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করতে এসেছি। আমার সঙ্গে এ কোন ধরনের অসভ্য আচরণ!”
বাদানুবাদের মধ্যে সেখানে উপস্থিত হন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। তাদের অনুরোধে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন দুজন।
নিপু বলেন, “শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের সমাবেশে এমন বিতর্কিত দুই ব্যক্তির উপস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শিরিন হক শহীদ মিনারকে অবমাননা করে এমন সব মন্তব্য করেছেন, যা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ঘটে যেতে পারত, কিন্তু সভাপতির উপস্থিতিতে তা হয়নি।”
তবে শিরিন হক শহীদ মিনারকে নিয়ে কোনো কটূক্তি করেছেন কি না, তা জানেন না বলে জানান গোলাম কুদ্দুছ।
“আমি তখন টিভি চ্যানেলগুলোকে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিছু জটলা থেকে আমি এগিয়ে যাই। আমাদের সংস্কৃতিকর্মীরা উষ্মা প্রকাশ করেছেন তাদের উপস্থিতিতে।”
তবে এই শোক সমাবেশে উপস্থিত হয়ে জাফরুল্লাহ ও শিরিন হক ‘কোনো ভুল করেননি’ বলেও মন্তব্য করেন গোলাম কুদ্দুছ।
“ডা. জাফরুল্লাহ খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন, জামায়াতের সঙ্গে উঠাবসা করেন, এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই মূলত ক্ষেপে উঠেছিল সংস্কৃতিকর্মীরা। পরে আমি তাদের শান্ত করেছি।”
নিপুর বক্তব্য তার ‘ব্যক্তিগত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ‘সাংগঠনিক মন্তব্য নয়’। এর দায়ভারও জোট নেবে না।
সূত্র : বিডিনিউজ
আপনার মন্তব্য