১০ জুলাই, ২০১৬ ১৫:৩০
জঙ্গিবাদে উৎসাহ যোগানোর অভিযোগে বাংলাদেশে বিতর্কিত 'ইসলামী চিন্তাবিদ' জাকির নায়েক পরিচালিত 'পিস টিভি'র সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রোববার (১০ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১২ দপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসনে আমুর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান।
এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছিলেন, 'পিস টিভি সম্পর্কে কিছু অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হবে।'
তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে ক্যাবল অপারেটরদের সংগঠন বাংলাদেশ কেবল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (কোয়াব) সভাপতি মীর হোসেন আক্তারও জানিয়েছিলেন, তারা সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন।
পিস টিভি সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, 'মন্ত্রণালয়ের অফিস খোলার পরই এ নিয়ে কাজ শুরু হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।'
জাকির নায়েক পরিচালিত মুম্বাইভিত্তিক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিষ্ঠান হল এই পিস টিভি। এ টিভিতে ধর্ম নিয়ে আলোচনায় ইসলামের যে ব্যাখ্যা তিনি দেন, তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশে গুলশানে জঙ্গি হামলায় অংশগ্রহণকারী একাধিক জঙ্গি জাকির নায়েক ও পিস টিভির মাধ্যমে প্রভাবিত হয়েছিলেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ। এরপর পিস টিভি বন্ধের দাবি উঠে বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে।
ভারতের মহারাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী জাকির নায়েকের পিস টিভির ভারতেও বৈধ কোন লাইসেন্স নেই। ২০১২ সালের ৬ ডিসেম্বর এ টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করা হয় বলে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বৈধ লাইসেন্স না থাকলেও ভারতের অনেক জায়গায় ক্যাবল অপারেটররা অবৈধভাবে এ টেলিভিশনের সম্প্রচার দেখাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠার পর গত কয়েক দিন ধরে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারত সরকার।
এদিকে, বাংলাদেশে জঙ্গি সম্পৃক্ততায় জাকির নায়েক ও তার পরিচালিত পিস টিভির ভূমিকা থাকলে তদন্তসাপেক্ষে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ভারত সরকার।
এমন অবস্থায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জাকির নায়েক ও পিস টিভির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়।
উত্তর প্রদেশে বারেলী এলাকায় ঈদের জামাতের খুৎবায় মুসলিম নেতারা জাকির নায়েককে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
জাকির নায়েকের ধর্মীয় ব্যাখ্যাকে ভুল আখ্যা দিয়ে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় কওমিমাদরাসার আলেমরা ফতোয়াও দিয়েছেন।
আপনার মন্তব্য