সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ জুলাই, ২০১৬ ০২:৪০

নিখোঁজ সাইফুল্লা সিলেট ক্যাডেট কলেজের সাবেক ছাত্র ও ধর্মান্তরিত মুসলমান!

রাজধানীর গুলশান-২ এর হলি আর্টিজান বেকারি ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নিখোঁজ যে ১০ যুবকের ছবিসহ নাম প্রকাশ করা হয়েছে তাদের একজন জাপান প্রবাসী মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে বাসিন্দা। তিনি সিলেট ক্যাডেট কলেজের ছাত্র ছিলেন। এমনটি দাবি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

সাইফুল্লাহ হিন্দু ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন, তার তার প্রকৃত নাম সুজিত দেবনাথ। সুজিত কড়ইগ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী জনার্ধন দেবনাথের ছেলে। তবে বাবা জনার্ধন এখনো জানেন না তার ছেলে সুজিত নিখোঁজ রয়েছেন।

সুজিতের বাবা জনার্ধন দেবনাথ জানান, গত ১৪ মাস আগে জিনদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রউফের বাসায় এসে সুজিত আমাদের খবর দিলে আমরা সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করি। সুজিত জাপান চলে যাওয়ার পর গত এক বছর আগে ফোনে সর্বশেষ কথা হয়েছিল, তবে সে নিখোঁজ কি-না সেটি আমরা জানি না।

তিনি আরো জানান, জিনদপুর ইউনিয়নের হুরুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে একই উপজেলার লাউর ফতেহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে সুজিত। এরপর সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে মেধা তালিকায় স্থান নিয়ে এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করে ২০০১ সালে জাপান সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে সেদেশের এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। লেখাপড়ায় অত্যন্ত মেধাবী মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকির পাসপোর্ট নম্বর টি কে ৮০৯৯৮৬০।

সুজিত জাপানেই হিন্দু থেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে জাপানি এক মেয়েকে বিয়ে করে মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকি নাম ধারণ করেন। বর্তমানে সুজিত ওরফে সাইফুল্লাহ চার ছেলে এক কন্যা সন্তানের জনক বলে জানা গেছে।

জিনদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রউফ জানান, সুজিতকে আমি ছোটবেলা থেকেই চিনি, পরে জানতে পারি সে জাপানে গিয়ে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। সর্বশেষ গত ১৪ মাস আগে সে আমার এখানে এসে তার মা-বাবার সঙ্গে দেখা করে গেছে। তবে সে তার বাড়িতে যায়নি এবং মা-বাবার সঙ্গে দেখা করে এক ঘণ্টা পরই ঢাকায় চলে যায়। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ নেই।

এদিকে গত এক বছর ধরে সুজিতের কোনো খোঁজ না থাকলেও এ নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজ হওয়ার কোনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেনি তার পরিবার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহম্মেদ জানান, থানায় সুজিতের নামে কোনো জিডি নেই। তবে কয়েক মাস আগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ থেকে মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকির নাম-ঠিকানা যাচাইকরণের জন্য বলা হয়েছিল। আমরা সেটি তদন্ত করে নাম-ঠিকানা যাচাই করে পাঠিয়েছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত