সিলেটটুডে ডেস্ক

২১ জুলাই, ২০১৬ ২৩:৩২

সাইফুল্লাহকে আইএসে নিয়ে যান জাপানি হাসান নাকাতা!

হাসান নাকাতা নামের এক ধর্মান্তরিত জাপানির প্রভাবে আইএসে যোগ দেন জাপানে গিয়ে ধর্মান্তরিত হওয়া বাংলাদেশি সাইফুল্লাহ ওজাকি ওরফে সুজিত দেবনাথ। জাপানের গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এমন তথ্যই মিলেছে। কেবল তিনি একাই নন তার জাপানি স্ত্রী ও চার সন্তানকে নিয়েই আইএসে যোগ দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

২০০৬ সালে ধর্মান্তরিত হবার পর সুজিত দেবনাথ থেকে সাইফুল্লাহ হলেও  জাপানের রিটসো মেইকান এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চতর ডিগ্রী নেয়ার তিনি ওজাকি উপাধি পান।  ওই ভার্সিটির গ্রাজুয়েটদের এই উপাধি দেয়া হয়।



এদিকে  ১৯৭৯ সালে নাকাতা ধর্মান্তরিত হন। তখন তার নাম হয় হাসান নাকাতা। এই হাসান নাকাতা সৌদি আরবে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও কাজ করেছেন। তারপরই তিনি উগ্র ধর্মীয় সংগঠন হিযবুত তাহরীরে যোগ দেন বলে খবর প্রকাশ করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। তখন থেকেই তার সাথে বিভিন্ন উগ্র সংগঠনের যোগসাজশ ঘটে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। তিনি আইএসের রিক্রোটার হিসেবে বেশ অনেকদিন থেকে কাজ করছেন বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে।

টোকিও ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক এবং মিসরের কায়রো ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়া নাকাতা ডশিয়া ইউনিভার্সিটিতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন ২০০৩ সালে। ২০১৫ সালের ১৫  জানুয়ারি জাপানের দুই সাংবাদিক আইএসের হাতে আটক হলে জাপান সরকার নাকাতাকে সিরিয়া পাঠায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে। এরপর ওইবছর  ৮ ফেব্রুয়ারি রয়র্টাসের এক প্রতিবেদনে তাকে সাম্প্রদায়িক স্কলার আখ্যা দিয়ে আইএসের সাথে মধ্যস্থতার সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এদিকে সুজিত ওরফে সাইফুল্লাহ  ২০১১ সালে পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়ার পর রিসুমেকান ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। পরে ২০১৫ সালে পদোন্নতী পেয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে। সাইফুল্লাহর সাথে একই বছরের ১৪ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ায় নাকাতার সাক্ষাৎ হয়েছে বলে জানা গেছে।

জাপানের জাতীয় পুলিশ সংস্থা (এনপিএ) বলছে, নাকাতা গা ঢাকা দিয়েছেন। রিসুমেকান ইউনিভার্সিটি সাইফুল্লাহকেও বহিষ্কার করেছে।  সাইফুল্লাহ বাংলাদেশে আইএসের কার্যক্রম বাড়াতে অর্থনৈতিক দিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের খবর।


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামের জনার্দন দেবনাথের ছেলে সজিত চন্দ্র দেবনাথ (পরবর্তীতে  সাইফুল্লাহ ওজাকি)  সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় শীর্ষ স্থান পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

পরে ২০০১ সালে জাপানে ফুল স্কলারশিপ পেয়ে পাড়ি জমান তিনি। এরপর সেখানেই ২০০৬ সালের দিকে ধর্ম বদল করেন।  নিজ এলাকাতে তুখোড় মেধাবি হিসেবে পরিচিত সুজিতের এই পালাবদল অনেকটা অবিশ্বাস্য ঠেকছে তার এলাকাবাসীর কাছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত