সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ জুন, ২০১৭ ১৪:৫৮

বনানীতে ধর্ষণ: সাফাত-নাঈমসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ

বনানীর দ্য রেইন ট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে (চার্জশিট) অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার (১৯ জুন) ঢাকার দুই নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শফিউল আজম এ অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন। মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ৯ জুলাই দিন ধার্য করেন আদালত।

গত ১২ জুন ঢাকার দুই নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শফিউল আজম অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য ১৯ জুন দিন ধার্য করেছিলেন।

১২ জুন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম হাফিজুর রহমান মামলাটি ঢাকার দুই নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য বদলির আদেশ দেন। আদেশ অনুযায়ী মামলাটির নথি ওই ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এর আগে, গত ৭ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি ঢাকার সিএমএম আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন। এতে সাফাত আহমেদকে প্রধান আসামি উল্লেখ করে ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। পরে রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ হাফিজুর রহমান এর আদেশে বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালে মামলাটি বদলি করা হয়।

অভিযুক্ত পাঁচজন হলেন- আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, জন্মদিনের পার্টির কথা বলে গত ২৮ মার্চ রাতে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া দুই তরুণীকে ধর্ষণ করেন শাফাত ও তাঁর বন্ধু নাঈম আশরাফ।

ঘটনার ৪০ দিন পর দুই তরুণী বনানী থানায় মামলা করতে গেলে মামলা না নিয়ে তাঁদের হয়রানি করে পুলিশ। এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে হইচই পড়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এরপর পুলিশ মামলা নিলেও আসামি গ্রেপ্তারে গড়িমসি শুরু করে। বনানী থানার ওসি ফরমান আলী আসামিপক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ আসে সংবাদমাধ্যমে। পরে পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা নিতে, ধর্ষণের শিকার দুই তরুণীর সঙ্গে আচরণে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে থানা-পুলিশের গাফিলতি নয়, ‘ব্যত্যয়’ ছিল।

প্রসঙ্গত, গত ১১ মে সাফাত ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আদালতে তোলা হলে আদালত সাফাতকে ৬ দিন এবং সাদমান সাকিফকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এরপর গত ১৭ মে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মামলার অন্যতম আসামি নাঈম আশরাফকে। এছাড়া গত ১৫ মে সাফাতের দেহরক্ষী রহমতকে গুলশান থেকে এবং ড্রাইভার বিল্লালকে নবাবপুর থেকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে রহমতকে ৩ দিন এবং বিল্লালকে ৪ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

পরবর্তীতে এই পাঁচজনের মধ্যে গাড়িচালক বিল্লাল ছাড়া বাকি চার আসামিই নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতের হাকিমের কাছে জবানবন্দি দেন। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকেরা মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত না পাওয়ার কথা জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত