২৭ মে, ২০১৫ ২০:০৪
চমৎকার সব ছবি তুলতেন সাব্বির। তার ছবির প্রশংসায় ভাসতেন বন্ধু মহল থেকে শুরু করে আলোকচিত্রের পণ্ডিতরাও। এখন থেকে ১৩ মাস আগে ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল ৬ বন্ধুসহ সাব্বির বেড়াতে গিয়েছিলেন সেন্ট মার্টিনে। ফেসবুকে শেষ স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন- "চলে যাচ্ছি দোস্ত, একদম নেটওয়ার্কের বাইরে"।
ওখানে গিয়ে ভাটার সময় সমুদ্রে নেমে হারিয়ে যান ৬ জনই। পরে ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা গেলেও সাব্বির ও উদয়ের কোন খোঁজ মেলেনি। স্বভাবতই ধরেই নেয়া হয়েছিল মৃতদেহ পাওয়া না গেলেও মারাই গেছেন এই দুজনও।
সেই হারিয়ে যাওয়া সাব্বির হাসানকে খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে তার পরিবার। ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে উদ্ধার বাংলাদেশিদের মধ্যে তাদের সন্তানও রয়েছে বলে মনে করছেন তারা। এমন দাবির ভিত্তি ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের একটি ছবি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ এক সকালে পত্রিকা দেখে চমকে ওঠেন তারা। ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের সমুদ্র উপকূলে উদ্ধার হওয়া যে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের ছবি ছাপা হয়েছে তাদের মধ্যে সাব্বির।
নির্যাতন-নিপীড়ন-অবহেলায় চেহারা অনেকটাই বিকৃত হয়ে গেলেও মায়ের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে না ছেলের মুখ।
১৩ মাস আগে সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে যায় সাব্বির। তখন থেকে তিনি আশায় বুক বেধেছেন। সময় গড়িয়েছে অনেক। ছেলের খোঁজে কোস্ট গার্ড, স্থানীয় প্রশাসনে যোগাযোগ কিছুতেই কোনো ফল হয়নি।
এ প্রসঙ্গে সাব্বিরের মা বলেন, মায়ের চোখ কখনও ভুল করতে পারে না। আমি একবার দেখেই চিনতে পেরেছি এটাই আমার হারিয়ে যাওয়া ছেলে। এরপর ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসসহ বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেছেন তারা। কিন্তু তেমন কোনো ইতিবাচক সাড়া পাননি এখনও।
সাব্বিরকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব এখন সরকারের উল্লেখ করে সাব্বিরের বাবা বলেন, আল্লাহ যখন ১৩ মাস পরে আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিয়েছে। তখন কেউ আমাদের থেকে তাকে দূরে রাখতে পারবে না। এখন দায়িত্ব সরকারের আমার ছেলের মতো যারা উদ্ধার হয়েছে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। সাব্বিরের বাবা-মার ধারণা, সমুদ্র সৈকত থেকে অপহরণ করা হয়েছে তাদের সন্তানকে।
আপনার মন্তব্য