সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০২:৩৬

‘হাওরাঞ্চলে ৪৫ শতাংশ শিশু অপুষ্টিতে মারা যায়’

বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলে শিশুমৃত্যুর ৪৫ শতাংশ অপুষ্টির কারণে ঘটছে বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্র্যাক। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, অপুষ্টির জন্য ওই এলাকার পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৪৬ শতাংশের বয়স অনুপাতে বৃদ্ধি হচ্ছে না।

মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘শস্য বৈচিত্র্যকরণে পুষ্টিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো বর্ণালী চক্রবর্তী।

তিনি জানান, সুনামগঞ্জের দিরাই এবং হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার দুই বছরের কম বয়সী ৬৪টি শিশুর পরিবারকে নিয়ে এই গবেষণা চালানো হয়।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি খর্বকায় শিশু রয়েছে হাওর অঞ্চলে, সেই সাথে সেখানে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর হারও বেশি। কারণ এই অঞ্চলে ছয় মাস বন্যা থাকে, হাওর অঞ্চলের মানুষদের পুষ্টি নিশ্চিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

ব্র্যাক এবং তাদের আন্তর্জাতিক গবেষণা অংশীদার ল্যাভারেজিং এগ্রিকালচার ফর নিউট্রিশন ইন সাউথ এশিয়ার (লানসা) যৌথ পরিচালনায় করা আরেক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৩৭ শতাংশই খর্বকায়, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ। এই তালিকায় বাংলাদেশের পরেই রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, যেখানে ৩৬ শতাংশ শিশু খর্বকায়।

দেশের মানুষের পুষ্টির কথা মাথায় রেখে ২০০৬ সালে প্রণীত জাতীয় খাদ্য নীতিমালা সংস্কার, বিনামূল্যে চাল বিতরণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কায়কোবাদ হোসেন।

তিনি বলেন, “দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেও আমাদের দেশে অপুষ্টির হার বেশি। কারণ আমাদের কৃষি উৎপাদিত পণ্য কম, সেই সাথে দেশের অধিকাংশ চাষী মাত্র একটি ফসল ফলায়।

“এরইমধ্যে আমরা দেশের ৬০টি উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি হাতে নিয়েছি, এই কর্মসূচির আওতায় প্রতি পরিবারকে ১০টাকা কেজিতে চাল বিতরণ করা হচ্ছে।”

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্ষা মৌসুমে দেশের ৯৯ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয় এবং শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৪৫ শতাংশ জমিতে ধান ফলানো হয়। এছাড়াও অধিকাংশ কৃষক শুধু একটি ফসলের উপর নির্ভরশীল, যা দেশের মানুষদের পুষ্টির ঘাটতির একটি কারণ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত