সিলেট টুডে ডেস্ক

২৭ ডিসেম্বর, ২০১৪ ১৫:১৮

পাইপ থেকেই মৃত অবস্থায় শিশু জিহাদ উদ্ধার

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রির বক্তব্যের অসারতা প্রমাণিত

রাতভর রুদ্ধশ্বাস অভিযানের পর শাহজাহানপুরের শিশু জিহাদের উদ্ধার অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তি ঘোষণা করার পর পাইপের ভেতর থেকেই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পর জানা যায় শিশুটি কয়েক ঘন্টা আগেই মারা যায় ।

এদিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রি আসাদুজ্জামান কামাল ঘোষণা দিয়েছিলেন পাইপের মধ্যে শিশু জিহাদ নেই কিন্তু তারপর সেখানে শিশুটিকে উদ্ধার হওয়ার পর তার বক্তব্যের অসারতা প্রমাণ হলো।

উদ্ধার হওয়া শিশুকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
  

চার বছর বয়সী জিহাদের ২৬ ডিসেম্বর বিকেলে  পাইপে পড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে উদ্ধার অভিযানে নামে ফায়ার সার্ভিস, সেই সঙ্গে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় অন্যরাও। পাইপের আড়াইশ মিটার গভীর পর্যন্ত ক্যামেরা নামিয়ে একটি কাপড়, স্যান্ডেল, কর্কশিটের টুকরো, টিকটিকি ও কাগজের মতো অবয়ব দেখা যায়। দ্বিতীয় দফায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় সার্ভেইলেন্স আইপি ক্যামেরা নামিয়েও কোনো শিশুর দেহের অস্তিত্বের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

এরপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ধারকর্মী দলের সঙ্গে কথা বলে তার ধারণা হয়েছে যে পাইপের ভেতরে শিশুটি নেই। এদিকে ২৩ ঘণ্টার অভিযানের পর শনিবার বেলা আড়াইটায় ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান ঘটনাস্থলে এক সংবাদ সম্মেলনে উদ্ধার অভিযান স্থগিতের ঘোষণা দেন। এর আগে  সকাল ১০টায় ফায়ার সার্ভিসের ডিএডি মো. হালিম সাংবাদিকদের বলেন, “ভেতরে কোনো ভিকটিম নেই।” অভিযান শেষ পর্যায়ে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন আমাদের আর কোনো কাজ নেই। দেশীয় পদ্ধতিতে স্থানীয় মানুষ যে চেষ্টা করছে, আমরা তাতে সহায়তা করছি।”

 

এদিকে জিহাদের বাবা মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নৈশ প্রহরী নাসিরউদ্দিনকে শুক্রবার ভোররাতেই পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। সকাল পর্যন্ত তাকে ছাড়া হয়নি।

দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট জিহাদকে নিয়ে শঙ্কায় তার মা খাদিজা বেগম প্রায় বাকরুদ্ধ। প্রতিবেশীরা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। জিহাদ পাইপের ভেতরে পড়েছে- এই ধারণার ভিত্তি কী জানতে চাইলে তার মামা মনির বলেন, “আসলে আমরা নিশ্চিত নই। আশে-পাশের লোকজন তাকে পড়তে দেখেছে বলেছিল। আর ফায়ার সার্ভিসও তো বলেছে- ও চারবার ওঠার চেষ্টা করেছিল, জুস খেয়েছে, অক্সিজেন পাঠানো হয়েছে।”

 

জিহাদ উদ্ধার অভিযান নিয়ে ফায়ার সার্ভিস বিভাগের কর্মিদের পুরনো আমলের যন্ত্রপাতি নিয়ে অভিযান পরিচালনা করায় এই বিভাগকে আধুনিকীকরণের জন্যে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন মহল।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত