সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ এপ্রিল, ২০১৮ ২১:৫৬

মদ আমদানিতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

মদ আমদানিকারক লাইসেন্সধারীরা মদ জাতীয় পানীয় আমদানি বা ক্রয়ে উৎসাহ হারাচ্ছেন। সেই সাথে অবৈধ মদের প্রবাহ ক্রমেই বাড়ছে। ফলে সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ কারণে মদ জাতীয় পানীয় আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কর ও সম্পূরক শুল্ক সহনীয় করার একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত ১৮ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপ সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এ প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, আমদানি নীতি আদেশ ২০১৫-১৮ এর অনুচ্ছেদ-২৪ অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী হোটেলসমূহ নির্ধারিত দ্রব্যাদি বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের শুল্ক মুক্ত বিপণনী হতে ক্রয় করতে পারে এবং শর্তসাপেক্ষে আমদানি করতে পারে। এক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী হোটেল বিগত বছরে মোট অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে অ্যালকোহলিক বেভারেজ ও যন্ত্রাংশ আমদানি করতে পারে।

অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার মাধ্যমে মদ জাতীয় পানীয় আমদানি করতে কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ, রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ সাপ্লিমেন্টারী ডিউটি ৩৫০ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্স ৫ শতাংশ, অ্যাডভান্সড ট্রেড ভ্যাট ৫ শতাংশসহ সর্বমোট ৫৯৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ ট্যাক্স প্রদান করতে হয়।

এ বিষয়ে উপ সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বন্ডেড ওয়্যারহাউজ বা বার পরিচালনার ক্ষেত্রে নানারূপ অনিয়ম ও অসঙ্গতিসহ পরিস্থিতি উন্নয়নে করণীয় সম্পর্কে বার মালিকদের সঙ্গে গত ২৩ জানুয়ারি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বিদেশ থেকে মদ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ককর কমানোর বিষয়ে মালিকরা প্রস্তাব করেন। সে প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এ প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়, বার লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন থেকে মদ জাতীয় পানীয় ক্রয়ের ক্ষেত্রে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অনুমোদন সাপেক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক শুল্ক নির্ধারণ ও তা পরিশোধ সাপেক্ষে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এর বন্ডেড ওয়্যারহাউজ মদ জাতীয় পানীয় সরবরাহ করে। উভয় ক্ষেত্রে মদ সংগ্রহের প্রক্রিয়া জটিল এবং ব্যয়বহুল হওয়ায় লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানগুলো মদ জাতীয় পানীয় আমদানি বা ক্রয় উৎসাহ হারাচ্ছে। এতে করে অবৈধ মদের প্রবাহ ক্রমেই বাড়ছে। ফলে সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়।

প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, মদ জাতীয় পানীয় আমদানির ক্ষেত্রে যদি শুল্ককর ও সম্পূরক শুল্ক সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায় তাহলে লাইসেন্সধারীরা বৈধ উপায়ে মদ জাতীয় পানীয় ক্রয়ে উৎসাহিত হবে। পাশাপাশি অবৈধ মদ ব্যবসার প্রবাহ হ্রাস পাবে। ফলে সরকার বর্তমানের তুলনায় আরও বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে।

এ প্রেক্ষিতে লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মদ জাতীয় পানীয় আমদানি বা ক্রয়ের ক্ষেত্রে শুল্ককর ও সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে সহনীয় মাত্রায় রাখার প্রস্তাবের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হচ্ছে বলে প্রস্তাবনায় জানানো হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত