সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ এপ্রিল, ২০১৮ ২৩:০৮

শেখ হাসিনার মতো প্রধানমন্ত্রী হতে চায় সেঁজুতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং যার চিঠির উত্তর দেন, সে তো বিশিষ্ট কেউ হবেই। আর তাই সোনারগাঁওয়ের মোগরাপাড়ার সৈয়দ রফিকুল ইসলামের ছোট্ট মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী রওনক জাহান সেঁজুতিকে নিয়ে তাই তার পরিবার ও এলাকাবাসীর গর্বের শেষ নেই। এক ঝলকে সবার নয়নমণি হয়ে ওঠা মিষ্টি মেয়েটি জানিয়েছে, বড় হয়ে সেও শেখ হাসিনার মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চায়।

সেঁজুতি বলে প্রধানমন্ত্রী চিঠিতে যেসব উপদেশ দিয়েছেন, আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো। নিয়মিত স্কুলে যাবো, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবো। বাবা মায়ের কথা শুনবো। আমি পড়াশোনা করে অনেক বড় হয়ে শেখ হাসিনার মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হাতে চাই। দেশের মানুষের সেবা করতে চাই।

আরও পড়ুন: দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীর চিঠির জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী

সেঁজুতি বলে আমার দাদুর (দাদি জুলেখা খাতুন) নাকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাকের অনেক মিল রয়েছে। আমার দাদুর কথা মনে করেই আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। আমার দাদু আমাকে অনেক আদর করতেন।  টিভিতে যখনই প্রধানমন্ত্রীকে দেখি, দাদুর কথা মনে পড়ে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সই করা চিঠিটি রোববার সকাল এগারোটায় বড় নগর পোস্ট অফিস থেকে গ্রহণ করেন সেঁজুতির বাবা সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। চিঠিটি সকালে সাড়ে এগারোটার দিকে সেঁজুতির হাতে পৌঁছে দেন তিনি। তারা মোগড়াপাড়া বড় নগর এলাকার থাকেন। সেঁজুতি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে।

প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পেয়ে আনন্দের বন্যা বইছে সেঁজুতির পরিবারে। সেঁজুতির বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠির জবাব পেয়ে আমার মেয়ে সেঁজুতি খুব খুশি। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সেঁজুতি প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো ছবি হাতে নিয়ে বসে ছিল। প্রধানমন্ত্রীর চিঠিসহ সেঁজুতির ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে সারাদিন অনেক ফোন এসেছে। অনেকে সেঁজুতির সঙ্গে কথা বলেছেন, তাকে দোয়া করেছেন।’


আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পেয়ে অভিভূত সেঁজুতি

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘চিঠিটি লিখে সেঁজুতি আমাকে বলে আব্বু প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠাবো কি করে। আমি বলি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঠিকানায় পাঠালেই যাবে। তখন মেয়ে চিঠিটি পাঠানোর জন্য আমাকে দেয়। কিন্তু, আমি মনে করেছি প্রধানমন্ত্রী অনেক ব্যস্ত। তার কি এই বাচ্চা মানুষের চিঠি পড়ার সময় আছে। এই কথা চিন্তা করে কয়েকদিন চিঠিটি পকেটে রেখে দেই। কিন্ত, মেয়ে বাসায় এলেই জিজ্ঞাসা করে বাবা চিঠি পাঠাইছো কিনা? উত্তরে বলি না। এভাবে দুই তিন দিন ঘোরানোর পর মেয়ে একদিন কান্না করে দেয়। পরে সেই দিনই আমি চিঠিটি পোস্ট করি।

চিঠি পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাকে ফোন করে। জানায় আমার মেয়ের চিঠি প্রধানমন্ত্রী পড়েছেন এবং চিঠির একটি উত্তর দিয়ে চিঠি লিখেছেন। পরে আমার কাছ থেকে ঠিকানা চান। আমি মোবাইলে মেসেজ করে ঠিকানা পাঠাই। রোববার সকাল এগারোটার দিকে স্কুলের ক্লাস শেষ করে বড় নগর পোস্ট অফিসের দিকে গেলে পোস্টমাস্টার বলেন, ‘আপনার মেয়ের নামে একটি চিঠি এসেছে। আমি চিঠিটি গ্রহণ করি।’’

সৈয়দ রফিকুল ইসমাম মোগড়াপাড়া এইচ জিএস স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তার বড় ছেলে সৈয়দ রাসেল মাহমুদ একজন ডাক্তার। মেঝো ছেলে সৈয়দ রাকিবুল ইসলাম রাজধানীর এআইইউবির বিবিএর ছাত্র। তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে সবার ছোট সৈয়দা রওনক জাহান সেঁজুতি।  সে বড়নগর প্রমিজ চাইল্ড একাডেমির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। সেঁজুতির মা একজন গৃহিণী।

সেঁজুতির দাদি জুলেখা খাতুন ২০১৬ সালের ২ ডিসেম্বর মারা যান। জুলেখা খাতুন সেঁজুতিকে অনেক আদর করতেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত