সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ মে, ২০১৮ ১০:২৬

বাঁচানো গেল না বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামণিকে

অবশেষে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে এবং দেশের সব মানুষের ভালোবাসার মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেল সাতক্ষীরায় বহুল আলোচিত বিরল রোগে আক্রান্ত কিশোরী মুক্তা মনি (১২)। বুধবার (২৩ মে) সকাল ৮টার কিছুক্ষণ আগে মুক্তামনি মারা যায় বলে জানিয়েছেন তার বাবা ইব্রাহিম হোসেন।

তার মৃত্যুতে গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বাড়িতে স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠেছে বাতাস।

প্রসঙ্গত, জন্মের দেড় বছর পর মুক্তামনির দেহে একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে সেটি বাড়তে থাকে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়েও কোনো চিকিৎসা হয়নি। তার আক্রান্ত হাতটি গাছের গুঁড়ির আকার ধারণ করে  প্রচণ্ড ভারি হয়ে ওঠে। এক সময় এতে পচন ধরে, পোকাও জন্মায়। দিন রাত চুলকানি ও যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে থাকত  মুক্তামনি। বিকট দুর্গন্ধের কারণে আত্মীয়স্বজন ও পড়শিদের যাতায়াতও এক রকম বন্ধ হয়ে যায়।

অনেক ডাক্তার ও হাসপাতালে মুক্তামনির চিকিৎসা করিয়ে কোনো লাভ হয়নি। অবশেষে দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলো মুক্তার করুণ চিত্র তুলে ধরে। পরে সরকারি উদ্যোগে মুক্তামনিকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।

চিকিৎসকরা বায়োপসি করে জানান, মুক্তামনির রক্তনালীতে টিউমার রয়েছে। পরে সিঙ্গাপুরে তার চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেখার পর সিঙ্গাপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুক্তার চিকিৎসায় তাদের অস্বীকৃতির কথা জানিয়ে দেয়। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি সরকারি খরচে মুক্তামনির চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

২০১৭ সালের ১০ জুলাই মুক্তামনিকে ভর্তি করার পর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও ডা. সামন্তলাল সেনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম টানা ছয় মাস চিকিৎসা দেয়। এ সময় তার দেহে কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসায় তার স্বাস্থ্যের উন্নতিও হয়।

ঢাকায় টানা ছয় মাস চিকিৎসা শেষে এক মাসের ছুটিতে মুক্তামনি ২০১৭ সালের ২২  ডিসেম্বর বাড়ি ফিরে আসে। এরপর থেকে ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়িতে রেখে তার চিকিৎসা চলতে থাকে। এরই মধ্যে মক্তামনির অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত