সিলেটটুডে ডেস্ক

২৯ মে, ২০১৮ ১৩:৩১

‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরও ১২ জন নিহত

মাদকবিরোধী অভিযান

চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধ ও গোলাগুলির ঘটনায় ৯ জেলায় ১২ জন ‘মাদক ব্যবসায়ী’ নিহত হয়েছেন। এছাড়া গত ১০ দিনে সারাদেশে শতাধিক নিহত হয়েছেন।

সোমবার (২৮ মে) রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত এসব ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

এসব অভিযানে ঢাকায় একজন, কুমিল্লায় দুইজন, যশোরে দুইজন, কুষ্টিয়ায় দুইজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, ঠাকুরগাঁওয়ে একজন, বরগুনায় একজন, ময়মনসিংহে একজন এবং সাতক্ষীরায় একজন নিহত হয়েছেন।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে।

এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, তারা মাদকের বিরুদ্ধে ‘অলআউট’ যুদ্ধে নেমেছেন, নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।

বিভিন্ন জেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায়-

ঢাকা

রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সুমন ওরফে খুকু সুমন এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত ও দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঘটনাস্থল থেকে এক হাজার পিস ইয়াবা, একটি ওয়ান শুটারগান পিস্তল, চারটি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। সুমনের বিরুদ্ধে শুধু দক্ষিণখান থানায় পাঁচটি মাদক সংক্রান্ত মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কুমিল্লা

কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- লিটন ওরফে কানা লিটন (৪৩) এবং বাতেন (৩৪)।

এসময় পুলিশের তিন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলেও জানায় পুলিশ।

ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও ৪০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত দুইজনই মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি পুলিশের।

যশোর

যশোরে মাদক ব্যবসায়ীদের কথিত গোলাগুলিতে যশোর শহরের রায়পাড়া এলাকার মানিক ও মন্ডলগাতি এলাকার আসর আলী নামে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

একইসাথে ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত দুইজনই মাদক ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের শেহালা মাঠে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছেন। সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের শেহালা মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন মুন্সীগঞ্জ গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে মুকাদ্দেস আলী (৪২) ও প্রাগপুর বাজারের মৃত ইয়াকুব আলীর ফজলুর রহমান ওরফে টাইটেল (৪৮)।

পুলিশ জানায়, এসময় আরো ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত দুইজনই মাদক ব্যবসায়ী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় উপজেলায় জনি মিয়া (৩০) নামে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, মাদক ব্যবসায়ী ও ডাকাতদের দুই পক্ষের গোলাগুলিতে জনি নিহত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মাদক ও ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে আটটি মামলা রয়েছে।

ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে হারুন (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোর রাতে উপজেলার শীতলপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত হারুন হরিপুর উপজেলার শীতলপুর এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে এবং মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে হরিপুর থানায় মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বরগুনা

বরগুনায় র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ফিরোজ মৃধা নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

ঘটনাস্থল থেকে একটি রিভলভার, একটি শুটারগান, দুই রাউন্ড রিভলভারের গুলি ও তিন রাউন্ড বন্দুকের গুলি উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব-৮।

বেতাগী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত ফিরোজ মৃধার বিরুদ্ধে বেতাগী থানায় ৯টি মাদকের মামলা রয়েছে।

ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মিজান (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

নিহত মিজান শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে কথিত গোলাগুলিতে আনিছুর রহমান নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

সোমবার রাত সোয়া ২টার দিকে উপজেলার কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের চিতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আনিছুরের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত এই বন্দুকযুদ্ধে গত ১০ দিনে অন্তত ১০৩ জনের মৃত্যু হল দেশের বিভিন্ন জেলায়।

তবে বিভিন্ন সময়ে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছে, ধরে নিয়ে হত্যা করা হয় তাদের স্বজনদের।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসব বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের ঘটনাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করে তা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত