সিলেটটুডে ডেস্ক

১৪ জুন, ২০১৮ ১৭:৪৩

সুমন জাহিদকে ‘পরিকল্পিতভাবে হত্যা’

শহীদ বুদ্ধিজীবী সেলিনা পারভীনের ছেলে সুমন জাহিদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার পরিবারের। বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার বড় ভায়েরা এটিএম এমদাদুল হক বুলবুল এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কে বা কারা তাকে উত্তর শাজাহানপুরের বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপরই রেললাইনের পাশে তার লাশ পাওয়ার খবর শোনা যায়। সুতরাং তাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আজ সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে অফিসে চলে যাই। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার দিকে সুমন জাহিদের স্ত্রী টুইসির ফোন পেয়ে দ্রুত ছুটে যাই তাদের বাসায়। তার পরিবারের কাছ থেকে যতটুকু শুনেছি, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় বাইরে।’

এছাড়া একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটিও সুমন জাহিদের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। যদিও পুলিশের ধারণা ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে সুমন জাহিদের।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে শাহজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মামুদ বলেন, “কয়েকজন বলেছেন, ওই ব্যক্তি রেল লাইন পার হওয়ার সময় হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। এরপরেই কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন তার শরীরে উপর দিয়ে চলে যায়।।”

পেশায় ব্যাংক কর্মকর্তা সুমন জাহিদ (৫৭) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। বিচারে যুক্তরাজ্যে পলাতক চৌধুরী মঈনুদ্দীন ও যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক আশরাফুজ্জামান উভয়কেই শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

সুমন জাহিদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, “এটি একটি নিছক দুর্ঘটনা, না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, সে বিষয়ে দ্রুত তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”

এর আগে যুদ্ধাপরাধ মামলার সাক্ষী সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ভাইয়ের লাশ এরকম সড়কের ধারে পাওয়া গিয়েছিল। সেটা হত্যাকাণ্ড ছিল বলে মনে করেন বুলবুল।

সুমন জাহিদ ফারমার্স ব্যাংকে চাকরি করতেন। চার মাস আগে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন বলে তার শ্যালক জানান। ১৯৬১ সালে ফেনীতে জন্মগ্রহণ করেন সুমন জাহিদ। ব্যাংকার হিসেবে কাজ শুরুর আগে তিনি কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেন।

১৯৭১ সালে তার মা সাংবাদিক সেলিনা পারভীনকে ধরে নিয়ে যায় আল বদর বাহিনী। পরে ১৮ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বধ্যভূমি থেকে উদ্ধার করা হয় তার মৃতদেহ। নিউ সার্কুলার রোডের বাড়ি থেকে মাকে নিয়ে যখন ধরে নিয়ে যায়, ছোট্ট সুমন তখন বাড়ির ছাদে খেলছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত