সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ জুলাই, ২০১৮ ০১:৪২

এবার সেই রনির বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা স্বীকৃতি’ আদায়ের অভিযোগ

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি ফের আলোচনায় এসেছেন। এক কোচিং সেন্টারের মালিককে মারধরের ভিডিওর পর এবার সেই কোচিং সেন্টারের মালিককে তুলে নিয়ে অস্ত্রের মুখে ‘মিথ্যা স্বীকৃতি’ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে গত বুধবার রাতে বায়েজিদ থানায় নুরুল আজিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জিইসি এলাকায় অবস্থিত ইউনাইটেড কোচিং সেন্টারের মালিক রাশেদ মিয়া।

গত বুধবার বেলা ২টা ৫৩ মিনিটে নুরুল আজিম রনি তার নিজের ফেসবুকে তিনটি ভিডিওচিত্র শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন ‘দেরিতে হলেও সুমতি হয়েছে রাশেদের।’

ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, রাশেদ মিয়াকে ঘিরে রয়েছেন বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। তারা রাশেদ মিয়াকে নানান কথা শিখিয়ে দিচ্ছিলেন, পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশ্নও করছিলেন। রাশেদকে নুরুল আজিমের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা বলতে শোনা যায়। এ তিনটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

এরআগে গত ১৯ এপ্রিল এই রাশেদ মিয়াকে নুরুল আজিম রনির চড় মারার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় নুরুল আজিমের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন রাশেদ মিয়া।

এ ঘটনার পর ছাত্রলীগের নগর সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে নুরুল আজিম রনি অব্যাহতি নেন, এবং সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদ সে অব্যাহতিপত্র গ্রহণ করে।

এ ছাড়া ৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহেদ খান বাদী হয়ে নুরুল আজিম রনিসহ ছাত্রলীগের সাত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে নগরের চকবাজার থানায় ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা করেছিলেন। জাহেদ খানকেও মারধর করার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। জাহেদ খানের করা মামলায় নুরুল আজিমকে ৪ জুন কারাগারে পাঠান আদালত। পরে ৭ জুন জামিন পান তিনি।

গত বুধবার রাতে বায়েজিদ থানায় করা অভিযোগে রাশেদ মিয়া উল্লেখ করেন, টিউশনি শেষে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের মোড়ে দাঁড়িয়ে তার এক পরিচিত ছাত্রের সঙ্গে নাশতা করছিলেন। এ সময় চারটি মোটরসাইকেলে করে নুরুন্নবী সাহেদ, খোরশেদ, মামুন ও সেলিমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন অস্ত্রধারী তাদের দুজনকে ঘিরে রাখে। পরে অস্ত্রধারীরা মুঠোফোনে নুরুল আজিমের সঙ্গে তাকে কথা বলিয়ে দেয়।

রাশেদ মিয়া বলেন, ‘ফোনে নুরুল আজিম ঘিরে রাখা সেই অস্ত্রধারীদের সঙ্গে বাদশাহ কমিউনিটি সেন্টারে যেতে বলেন। না হলে তারা আমাকে খুনও করে ফেলতে পারে বলে জানান তিনি। পরে আমি ও আমার ছাত্রকে মোটরসাইকেলে করে কমিউনিটি সেন্টারটিতে নিয়ে যায় অস্ত্রধারীরা। এরপর তারা আমাদের দুজনকে একটি অন্ধকার কক্ষে আটকে রেখে মারধর করে। পরে অস্ত্রের মুখে তারা তাদের শিখিয়ে দেওয়া কথা আমাকে বলতে বাধ্য করে। আমার কথা বলার সময় তারা ভিডিও করে রাখে। পরে তারা অস্ত্রের মুখে তিনটি খালি স্ট্যাম্পে তাদের শিখিয়ে দেওয়া কথা লিখে ও আমাদের সই নিয়ে রাত ১২টার দিকে মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল মোড়ে ফেলে যায়।’

বায়েজিদ থানার ওসি মো. আতাউর রহমান খন্দকার রাশেদ মিয়ার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘নুরুল আজিমের বিরুদ্ধে তুলে নিয়ে মারধরের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত